চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী—৫ দিনের আয়োজনে যা থাকছে

শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ-কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আগামী ১৮ আগস্ট থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপি জন্মাষ্টমী উৎসব চট্টগ্রামসহ সারাদেশে পালিত হবে। এ উপলক্ষে নগরের ঐতিহাসিক জেএম সেন হলে বর্ণিল অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া ১৯ আগস্ট সকাল ৮টায় বের হবে ঐতিহাসিক মহাশোভাযাত্রা।

শনিবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শিল্পপতি সুকুমার চৌধুরী।

আরও পড়ুন: ‘জন্মাষ্টমী’—এবারও মহাশোভাযাত্রায় মানা, উৎসব হবে অনাড়ম্ভর

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারি দল যে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছিল তাতে সুস্পষ্ঠভাবে লিপি ছিল এই রাজনৈতিক দল পুনরায় নির্বাচিত হলে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন বাস্তবায়ন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন বাস্তবায়ন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন ও দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা করবে। কিন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আগামী সংসদ নির্বাচনের দেড় বছর আগেও এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকারের দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। এতে আমরা হতাশ ও বিস্মিত। আমরা এ মুহূর্তে সরকারি প্রতিশ্রুতির দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাই।

সুকুমার চৌধুরী বলেন, বিগত বছরে শারদোৎসবে কুমিল্লার পূজোমণ্ডপে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে পরিকল্পিত হামলা চালানো হয়েছে। নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জেএম সেন হলের পূজোমণ্ডপসহ দেশের বিভিন্ন পূজোমণ্ডপে ভাঙচুরসহ সনাতনী ভক্তকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এসব নারকীয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, সম্প্রতি নড়াইলে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ তপন কুমার সরকারকে প্রকাশ্যে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্থা করা হয় এবং সাভারের আশুলিয়ায় স্কুল শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া নড়াইলে মিথ্যা গুজব রটিয়ে সাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠী হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। এসব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পাঁচ দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনমালায় রয়েছে- ১৮ আগস্ট বিকাল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভার্চুয়ালি সাক্ষাৎকার, সন্ধ্যা ৭টায় মহতী ধর্মসম্মেলন। ১৯ আগস্ট সকাল ৯টায় ঐতিহাসিক মহাশোভাযাত্রা, দুপুর ১টায় মাতৃসম্মেলন, সন্ধ্যা ৭টায় ধর্মমহাসম্মেলন, রাত ১২টায় জন্মাষ্টমী পূজা। ২০ ও ২১ আগস্ট অহোরাত্র ষোড়শ প্রহরব্যাপী মহানামযজ্ঞ। প্রতিদিন দুপুরে ও রাতে মহাপ্রসাদের ব্যবস্থা থাকবে। ২২ আগস্ট ব্রাহ্মমুহূর্তে মহানামযজ্ঞের পূর্ণাহুতি।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সমন্বয় সভায় পুলিশ কমিশনার

সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন।

উপস্থিত ছিলেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুজিত কুমার বিশ্বাস, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য, সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল, চট্টগ্রাম মহানগর জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ সভাপতি লায়ন দুলাল চন্দ্র দে, সাধারণ সম্পাদক লায়ন শংকর সেনগুপ্ত, মহাশোভাযাত্রা কমিটির আহ্বায়ক মাইকেল দে, পরিষদ কর্মকর্তা লায়ন তপন কান্তি দাশ, প্রকৌশলী আশুতোষ সরকার, তাপস কুমার নন্দী, আশীষ চৌধুরী, শ্রীপ্রকাশ দাশ অসিত, সুমন দেবনাথ, প্রকৌশলী সুভাষ গুহ, প্রকৌশলী তুহিন রায়, ডা. বিধান মিত্র, রতন আচার্য্য, সজল দত্ত, এস প্রকাশ পাল, ডা. বিদ্যুৎ ভূষণ দাশগুপ্ত, সমীরণ মল্লিক, নিউটন মজুমদার, মৌসুমী চৌধুরী, নন্দিতা দাশগুপ্তা ও তিশা চৌধুরী।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!