গুলজার টাওয়ারে বিলের আড়ালে মাসে ২ লাখ টাকার বাণিজ্য

প্রতি মাসেই সার্ভিস চার্জ দেন নগরের চকবাজারের গুলজার টাওয়ারের ব্যবসায়ীরা। এ সার্ভিস চার্জের সঙ্গে যুক্ত মার্কেটের এডজাস্ট ফ্যান ও জেনারেটর। কিন্তু এরপরও আলাদা করে তাদের কাছ থেকে নেওয়া হয় এসব বিল! শুধু তাই নয়, বিভিন্ন বিলের নামে প্রতি মাসেই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি টাকা। এভাবে প্রতি মাসে অন্তত দুই লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, গুলজার টাওয়ারে মোট দোকান ২৭০টি। গত ১৫ জানুয়ারি বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত তথ্য যাচাই নিয়ে একটি আবেদন করেন ১৫ জন দোকান মালিক। আবেদনের অনুলিপি গুলজার টাওয়ার ব্যবসায়ী সমিতি, বিদ্যুৎ বিষয়ক উপকমিটি এবং আহ্বায়ক কমিটির কাছেও পাঠানো হয়। কিন্তু আবেদনের দেড় মাস হতে চললেও কোনো সদুত্তর পাননি মালিকপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দোকানের চুক্তিপত্রে এডজাস্ট ফ্যান, গলির বিল ও জেনারেটর বিল সার্ভিস চার্জের ভেতর অন্তর্ভুক্ত হলেও আলাদা করে বিল নেওয়া হচ্ছে। সার্ভিস চার্জের বাইরে ঘাটতি বিল, গলির বিল, এডজাস্ট ফ্যান ও জেনারেটর বিলের নামে প্রতিমাসে প্রায় ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে ‘হুইলচেয়ার’ বাণিজ্য

শারমিন আক্তার নামে এক ব্যবসায়ীর ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের বিদ্যুৎ বিলে দেখা যায়, মিটারে ব্যবহার করা হয়েছে ৩১ ইউনিট। প্রতি ইউনিট ধরা হয়েছে ১৩ টাকা ৮০ পয়সা। এ হিসাবে বিদ্যুৎ বিল আসে ৪২৮ টাকা। এর বাইরে বিবরণ ছাড়া লেখা হয়েছে ১৩০ টাকা। আবার পাশে লেখা হয়েছে পিডিবি কর্তৃক অতিরিক্ত বিল ৭৩৫ টাকাসহ মোট ৮৬৫ টাকা। এছাড়া ডিসেম্বরের জেনারেটর বিল ২০০ টাকা এবং ২০২৩ নভেম্বরের সার্ভিস চার্জ ৩৪০ টাকাসহ মোট বিল ধরা হয়েছে এক হাজার ৮৩৩ টাকা।

মো. এসকান্দর নামে আরেক ব্যবসায়ীর চলতি বছরের জানুয়ারির বিলে ৭৬ ইউনিটের বিল দেখানো হয়েছে এক হাজার ৪৯ টাকা। এছাড়া গলির বিল ১২৯ টাকা ও ঘাটতি বিল দেখানো হয়েছে ১৫০ টাকা। সব মিলিয়ে মোট বিল এক হাজার ৩২৯ টাকা।

মিডিয়াটেক দোকান মালিক দাউদ আরমান বলেন, প্রায় প্রতি মাসেই পিডিবির অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল, জরিমানা, গলির বিল, ঘাটতি বিল বিভিন্ন নামে অতিরিক্ত একটা খরচ মূল বিলের সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হয়। আবার বিল সঠিক সময়ে পরিশোধ না করলে বিলের উপর জরিমানা যোগ করে দেওয়া হয় এবং সময়মতো পরিশোধ করতে না পারলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গুলজার টাওয়ার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাফেজ মো. আবুল হায়াত আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, অতীতে কী ধরনের বিল নেওয়া হয়েছে তা আমাদের বিষয় নয়। আমরা বিলের বাইরে কোনো বাড়তি টাকা নিই না। অতীতের বিষয়গুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যোগাযোগ করা হলে গুলজার টাওয়ার ব্যবসায়ী সমিতির ম্যানেজার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। যথাযথ প্রক্রিয়ায় দোকানিদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিল আদায় করে থাকি। আমাদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের যে কথা বলা হচ্ছে, তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!