করোনার সঙ্গে ডেঙ্গু শঙ্কায় চট্টগ্রাম শহর, ১৫ স্পটে মিলেছে এডিস লার্ভা

চট্টগ্রাম শহরে করোনা মহামারীর সঙ্গেই তৈরি হয়েছে ডেঙ্গুর শঙ্কা। করোনাকালীন এই সময়ে নগরের ১৫ স্পটে মিলেছে এডিস মশার লার্ভা। নগরের ৫১টি স্পটের নমুনায় ১৫টিতেই এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এসব লার্ভায় ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে মশা। তবে ভীতি ছড়ানোর আশঙ্কায় ওইসব স্থানের নাম প্রকাশ করা করা হয়নি।

রোববার (১ আগস্ট) দুপুরে এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছয় সদস্যের একদল গবেষক।

গবেষক দলের আহ্বায়ক ও চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আহ্বানে আমরা মশকনিধনে নগরে প্রয়োগ করা ওষুধের কার্যকারিতা যাচাই করতে গবেষণা চালাই। গবেষণার জন্য গত ৫ জুলাই থেকে চট্টগ্রাম নগরের ১০০টি স্পট পরিদর্শন করে ৫১টি স্পটের মশার লার্ভা সংগ্রহ করা হয়। তাছাড়া পরীক্ষার সুবিধার্থে চবি ও এর পাশের ছয়টি স্পটের লার্ভাও সংগ্রহ করা হয়। পরে পরীক্ষাগারে নগরের এসব স্পটের নমুনা পরীক্ষা করে ১৫টি স্পটে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, বাড়ির ফুলের টব, পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের পাত্র, দোকানের ব্যাটারির সেল ও টায়ার এবং রাস্তার পাশের পাইপে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে মিলেছে এডিস মশার লার্ভা। এসব এলাকা থেকে সংগৃহীত লার্ভার শতভাগই ছিল এডিসের।

তিনি আরও বলেন, সাধারণত লার্ভা থেকে দুই-তিন দিনের মধ্যে মশার জন্ম হয়ে যায়। এসব লার্ভায় ইতোমধ্যে মশা তৈরি হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই বিস্তারিত প্রতিবেদন চসিকে হস্তান্তর করা হবে।

এডিস মশার লার্ভা নগরের কোন কোন স্থানে পাওয়া গেছে জানতে চাইলে ড. রবিউল হাসান বলেন, আপাতত আমরা স্থান প্রকাশ করতে চাই না। এটি প্রকাশ করলে ভীতি ছড়াতে পারে। তবে বিস্তারিত প্রতিবেদনে স্থান উল্লেখ থাকবে।

জানা গেছে, নগরে মশকনিধনে প্রয়োগ করা ওষুধের কার্যকারিতা যাচাই করতে চবি কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম। মেয়রের আমন্ত্রণে গত ১৪ মার্চ চসিক কার্যালয়ে আসেন চবি শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে ছিলেন চবির প্রক্টর ও সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন ভূঁইয়া, সহযোগী অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক রাসেল ও কাজী নুর সোহাত।

এরপর ওষুধের কার্যকারিতা যাচাই করতে চবিতে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন হয়।

২৪ মার্চ গঠিত ওই কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়াকে আহ্বায়ক এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুককে সদস্য সচিব করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তাপসী ঘোষ রায়, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এইচ এম আবদুল্লাহ আল মাসুদ এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী।

জানা গেছে, এর আগে গতবছর ওষুধ ছিটানোর পরও মশার উৎপাত না কমায় পরীক্ষার জন্য ডিসেম্বরে বিসিএসআইআর (বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ) গবেষণাগারে লার্ভিসাইড (মশার ডিম ধ্বংসকারী ওষুধ) এবং এডালটিসাইড (পূর্ণাঙ্গ মশা ধ্বংসকারী) পাঠায় চসিক কর্তৃপক্ষ। তবে সে সময় সংস্থাটি চসিককে জানায়, মশার ওষুধের গুণগত মান তাদের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয় না।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!