কক্সবাজার এক্সপ্রেস—হুইসেল শুনেও সরে না, চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে সেলফি

‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ট্রেন দেখতে প্রতিদিন রেললাইন ও এর আশপাশে ভিড় করছে শত শত মানুষ। এদের কেউ রেললাইনে বসে আড্ডা দেন, তো কেউ দুর্ঘটনার কথা না ভেবেই ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এভাবে ছবি তুলতে গিয়েই ঘটছে দুর্ঘটনা। এরপরও সচেতন করা যাচ্ছে না। চকরিয়া থেকে ইসলামাবাদ স্টেশন পর্যন্ত রেললাইন তো এখন রীতিমতো বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে!

গত ৭ নভেম্বর লোহাগাড়ার আমিরাবাদে চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে সেলফি তুলতে গিয়ে মো. রাশেদ (২২) নামে এক যুবক গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছুটির দিন শুক্রবার উৎসুক মানুষের ভিড় বেড়ে যায়। বারণ করলেও তারা শুনেন না। সাধারণ মানুষ সচেতন হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে। এছাড়া দোহাজারী-কক্সবাজার লাইনের বন্ধ স্টেশনগুলোতে লোকবল নিয়োগের চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে, গত ১ নভেম্বর থেকে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামে এক জোড়া ট্রেন চালু হয়। এরপর থেকে দোহাজারী- কক্সবাজার রেললাইনে প্রতিদিন ভিড় করছে শত শত মানুষ। সকালে কক্সবাজারগামী ও দুপুরের ঢাকাগামী ট্রেন আসা-যাওয়া দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় লেগেই আছে। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় রেললাইন ও আশপাশে থাকে মানুষের উপচেপড়া ভিড়।

আরও পড়ুন : প্রস্তুত কক্সবাজার এক্সপ্রেস, ইতিহাস ছোঁয়ার আনন্দে রানা

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দোহাজারী, সাতকানিয়া কেরানীহাট, বিশ্বরোড এলাকা, লোহাগড়া স্টেশনের আশপাশ, চকরিয়া স্টেশনের আশপাশ, বরইতল, ডুলাহাজারা ও ইসলামাবাদ স্টেশন এলাকায় মানুষেরা বেশি ঘুরতে আসেন। এসময় স্টেশন, রেললাইন ও আশপাশের এলাকায় আড্ডা দেন ও ছবি তুলেন। অনেকে ট্রেনের হুইসেল শুনেও সরেন না। অনেকে চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে বিপজ্জনকভাবে সেলফি তুলেন। এ অবস্থায় যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা করা হচ্ছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ঢাকা থেকে কক্সবাজার আরেক জোড়া ট্রেন চালু হবে। চার জোড়া ট্রেন চালু হলে উৎসুক মানুষের ভিড় আরও বাড়বে। এজন্য সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। তা নাহলে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়তে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. ফরহাদ বিন জাফর আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, প্রতিদিন শত শত মানুষ ট্রেন দেখতে ভিড় করছেন। শুক্রবারে সেই ভিড় আরও বাড়ে। উৎসুক লোকজনকে বারণ করলেও তারা শুনেন না। উল্টো ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। মানুষ সচেতন হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, দোহাজারী-কক্সবাজার লাইনে যেসব স্টেশন বন্ধ রয়েছে সেগুলোতে লোকবল নিয়োগের চেষ্টা চলছে। লোকবল নিয়োগ হলে বিপজ্জনকভাবে রেললাইন ও আশপাশে চলাচলে কমে যাবে। তবে দুর্ঘটনা এড়াতে সাধারণ মানুষের সচেতনতা খুবই জরুরি।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!