ওরা দালাল—রোগী দেখলেই ছুটে যায় চমেক হাসপাতালে

নতুন বছরের প্রথম দিনেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছয় দালালকে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (১ জানুয়ারি) সকালে হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও গাইনি ওয়ার্ডের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটক দালালেরা হলেন- মো. নূর হোসেন (৩৮), মো. মহসিন সরকার (২৩), মো. শফিউল বশর (১৯), ইরফানুল আলম তুষার (২৪), জয় ধর (২৪) ও ইমন সরকার (২৪)।

হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আশেক বিষয়টি নিশ্চিত করে আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, রোববার সকাল পৌনে ১১টার দিকে হাসপাতালের ষষ্ঠ তলার ৩২ এবং ৩৩ নং ওয়ার্ড থেকে তিনজন ও বহির্বিভাগ থেকে একজনকে আটক করা হয়। একইদিন বেলা পৌনে ১২টার দিকে বহির্বিবিভাগ থেকে দুজনকে আটক করা হয়।

তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযুক্তদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর তিনজন ও ১৪ ডিসেম্বর এক দালালকে হাসপাতাল থেকে আটক করেছিল পুলিশ।

জানা গেছে, হাসপাতালে সংঘবদ্ধ দালালচক্র বিভিন্ন ওয়ার্ডে ছদ্মবেশে কাজ করে। তারা টেস্ট এবং ওষুধের জন্য রোগীর স্বজনদের কৌশলে নিয়ে যায় পছন্দের ল্যাব ও ফার্মেসিতে। তাদের কথা না শুনলে রোগী ও স্বজনদের পড়তে হয় নানা হয়রানির মুখে।

বিশেষ করে গাইনি ওয়ার্ডে বেশ তৎপর থাকে চক্রের সদস্যরা। উন্নত চিকিৎসার প্রলোভনে সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় বড় অঙ্কের টাকা। অথচ এই হাসপাতালে স্বল্প খরচে হয় রোগীর চিকিৎসা।

এছাড়া হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মাচারীদের সঙ্গে রয়েছে দালালদের যোগাযোগ। এসব কর্মচারীর মধ্যে রয়েছে আয়া। রোগীর কাছ থেকে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন আয়ারা। পরে এসব ওষুধ টাকার বিনিময়ে দালালের হাতে তুলে দেন।

অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার নিয়ন্ত্রণও এই সিন্ডিকেটের হাতে। হাসপাতালের ট্রলি আর হুইলচেয়ার ব্যবহারের জন্য সেবাগ্রহীতাদের গুনতে হয় টাকা। যদিও এই সেবা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। রোগীদের মোবাইল ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরিসহ রোগীর স্বজনদের অজ্ঞান করে মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে ওই চক্রের বিরুদ্ধে।

এর আগেও হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে একাধিক দালালকে বিভিন্ন অভিযোগে আটক করা হয়। তবুও হাসপাতালে কমেনি তাদের আনাগোনা।

আরএস/এসআই

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!