আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় এসেছে : আ জ ম নাছির

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, আজ স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি ধনী শ্রেণি অক্টোপাসের আটটি পায়ে এদেশের সমাজ ও রাজনীতিকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে ফেলেছে। গড়পড়তা আয় ও প্রবৃদ্ধি বেড়ে গেলেও ধনী-গরিবের বৈষম্য দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। এই অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করতে হলে কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হবে। একই সাথে যারা গরিব মানুষের হক কতল করছে এবং অসাধু ব্যবসায়ী ও মুনাফালোভীরা নানা কৌশলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লুটপাট করছে তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ শুরু করার সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সেই মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেবেন।

রোববার (১৭ মার্চ) সকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনে এ আয়োজনে আ জ ম নাছির বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু ভৌগলিক স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেননি। দীর্ঘ ২৪ বছরের পাকিস্তানি শাসনামলে বাঙালির অধিকার বারবার ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল এবং এই জাতিকে শৃঙ্খলিত করে রেখে শোষণ-শাসনে স্টিমরোলার চালিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু এই সত্যটিকে অনুধাবন করে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। তার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা ছিল সামাজিক বৈষম্যমুক্ত একটি বিশুদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। যেই সমাজে শোষিতরাই হবে প্রকৃত ক্ষমতার উৎস।

আরও পড়ুন : বিদেশি ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে সফল হবেন শেখ হাসিনা : আ জ ম নাছির

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, আজ থেকে ১০৪ বছর আগে টুঙ্গিপাড়ার নির্ভৃত অজপাড়া গায়ে বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করেছিলেন বাংলাদেশের জন্মের জন্যই। একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম ও অভ্যূদয়ের ইতিহাসে যে নামটি সর্বপ্রথম আসে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ইতিহাসের অংশই শুধু নন, ইতিহাসের স্রষ্টাও। এই ইতিহাস কেউ কখনও মুছে দিতে পারেনি এবং পারবেও না।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর আরাধ্য সোনার বাংলা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। এটা বাস্তবায়নের পথে এখনও বহু বাধা বিদ্যমান। সবচেয়ে বড় বাধা হলো একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি ও তাদের দোসররা এখনও মাঠে আছে। তাদেরকে নির্মূল করতে না পারাটাই আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার দায়ভার আমরা যদি না নিই নতুন প্রজন্ম আমাদেরকে ক্ষমা করবে না।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাছান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য একেএম বেলায়েত হোসেন ও শেখ মাহমুদ ইছহাক, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ ও শফিক আদনান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, অ্যাড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মসিউর রহমান চৌধুরী ও মো. হোসেন, উপপ্রচার সম্পাদক শহিদুল আলম, নির্বাহী সদস্য ইঞ্জি. বিজয় কৃষাণ চৌধুরী, রোটারিয়ান মো. ইলিয়াছ ও বেলাল আহমেদ, থানা আওয়ামী লীগের আবুল মনসুর, সিদ্দিক আলম ও জাহাঙ্গীর চৌধুরী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মো. জামাল উদ্দীন, ফয়জুল্লাহ বাহাদুর, আব্দুল আজিম, নুর মো. নুরু, লায়ন আশিষ ভট্টাচার্য ও মিথুন বড়ুয়া।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহিলা সম্পাদিকা জোবাইরা নার্গিস খান, নির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, মহব্বত আলী খান, বখতেয়ার উদ্দীন খান, পেয়ার মোহাম্মদ, ড. নিছার উদ্দীন আহমেদ মঞ্জু ও মোর্শেদ আক্তার চৌধুরী।

এর আগে সকালে দলীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। একইসঙ্গে খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কলিম উল্লাহ চৌধুরী ও ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জহুর আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোকসহ বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!