আনোয়ারার ১০ হাজার জেলের আশার ফানুস ফুটো

দীর্ঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর বুকভরা আশা নিয়ে ইলিশ ধরতে বঙ্গোপসাগরে নেমছিল আনোয়ারা উপকূলের প্রায় ১০ হাজার জেলে। কিন্তু তাদের সেই আশার ফানুস ফুটো হয়ে গেছে। ভরা মৌসুমেও মিলছে না পর্যাপ্ত ইলিশ। এ অবস্থায় নিজেদের খরচ পোষাতে হিমশিম খাচ্ছেন উপকূলের জেলেরা।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপকূলে ছোট-বড় মিলে ৯১০টি মাছ ধরার নৌকা সাগরে নামতে প্রস্তুত হয়েছে। এর মধ্যে জুঁইদন্ডিতে ১১০টি, ফকিরহাট থেকে সরেঙ্গা পর্যন্ত ১৭০টি, পারকিতে ১৮টি, উঠান মাঝির ঘাটে ২৮০টি। অন্য নৌকাগুলো সাত্তার মাঝির ঘাট, গলাকাটা ঘাট, পিচের মাথা ও বাছা মাঝির ঘাট এলাকার।

রাসেল হোসেন নামে এক জেলে বলেন, অন্যান্য বছর সাগরে সকালে নেমে বিকেলে আসার সময় ১২-১৭ মণ মাছ নিয়ে আসা যেত। এ বছর দুদিন সাগর থেকে আসার পরও ৫-৮ মণের বেশি মাছ নিয়ে আসা যায়নি।

জাফর নামে এক বোট মালিক বলেন, একজন শ্রমিকের বেতন ৩০-৩৫ হাজার টাকা, একজন মাঝির বেতন ৫০-৬০ হাজার টাকা। বোটের তেল, শ্রমিকদের খাবার-দাবার সবমিলিয়ে একবার বোট নামানোর সময় ২০-৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু এখন যে হারে জালে মাছ পড়ছে এগুলো দিয়ে বোটের খরচও উঠছে না।

আবু তাহের নামে এক বদ্দার বলেন, প্রতিটি বোটে এক জো’তে দেড় লাখ টাকার মতো খরচ হয়। খরচ পুষিয়ে লাভের মুখ দেখতে হলে প্রতিটি বোটে এক জো’তে ৫০ মণ করে মাছ আসতে হবে। কিন্তু এখন আসছে ২০-২৫ মণ। যা দিয়ে খরচ পোষানো সম্ভব না।

মালেক শাহ্ মৎস্য গদির মালিক ওয়াসিম বলেন, এক গদি থেকে ৩৫-৫০ মণ করে শুধু উঠান মাঝির ঘাট থেকে ৪০০-৫০০ মণ ইলিশ মাছ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় নেওয়া হয়। যার মধ্যে ছোট মাছগুলো মণ ১০ হাজার এবং বড়গুলোর দাম নেওয়া হয় ১৬ হাজার টাকা করে।

এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. রাশিদুল হক আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, গতবছরও নিষেধাজ্ঞা শেষের পর প্রথমদিকে এ অবস্থা হয়েছিল। পরবর্তীতে জেলেদের জালে বিপুল পরিমাণ ইলিশ মাছ ধরা পড়েছিল। আশা করি, এবারও আগামী জো থেকে জেলেদের জালে আশানুরূপ মাছ ধরা দিবে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর এই এক সপ্তাহে আনোয়ারার বিভিন্ন ঘাট থেকে প্রায় ৫ টন মাছ তোলা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!