অপহরণের ৩ বছর পর চট্টগ্রামের শিশুকে ঢাকায় পেল পিবিআই

মার্বেল কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাকলিয়া এলাকা থেকে সিয়াম (১১) নামে এক শিশুকে অপহরণ করেন প্রতিবেশী নাছির। মুক্তিপণ আদায়ে পরিবারের সঙ্গে বনিবনা হলেও রাজধানীতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেন শিশুটিকে। তাই আদায় করতে পারেননি মুক্তিপণ। পুলিশের হাতে অপহরণকারী আটক হলেও সন্ধান দিতে পারেনি সিয়ামের। তিন বছর পর সেই সিয়ামকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন উত্তর পানগাঁও কন্টেইনার টার্মিনাল এলাকার রেস্টুরেন্ট থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, সিয়ামের বাবা দেলোয়ার হোসেন কাতার প্রবাসী। তার মা ইয়াছমিন বেগম দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বাকলিয়া থানা এলাকায় বসবাস করেন। ২০১৯ সালের ২৫ জুন বিকেলে নিখোঁজ হয় সিয়াম। পরদিন ২৬ জুন এ বিষয়ে বাকলিয়া থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়।

এদিকে একইদিন অপহরণকারী ফোনে পরিবারকে জানায় ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দিলে সিয়ামকে মেরে লাশ রাস্তায় ফেলে দেওয়া হবে। অপহরণকারীর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণে রাজি করান মা ইয়াছমিন। অপহরণকারী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় টাকা নিয়ে যেতে বলে। পরিবার তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সেসব জায়গায় যায়। কিন্তু অপহরণকারী টাকা নিতে আসেনি। সিয়ামকেও ফিরিয়ে দেয়নি।

আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ বাঁচাতে গিয়ে চট্টগ্রামে ‘দ্বিগুণ’ ব্যবহার বেড়েছে ডিজেলের

এদিকে পুলিশ তদন্তে নেমে মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে জড়িত সন্দেহে মো. নাছিরকে আটক করে। কিন্তু শিশু সিয়ামকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। পরে একই বছরের ২৯ অক্টোবর মামলার তদন্তভার পিবিআইকে দেওয়া হয়।

মামলা তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানান, গ্রেপ্তার নাছির জিজ্ঞাসাবাদে জানান, ঋণগ্রস্ত হয়ে ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য সিয়ামকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করে সে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন বিকেল ৫টায় মার্বেল কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে শিশু সিয়ামকে অপহরণ করে ট্রেনে ঢাকা নিয়ে যায়। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরির পর সিয়াম কৌশলে নাছিরের হেফাজত থেকে পালিয়ে যায়।

পিবিআই মেট্রো প্রধান পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা জানান, তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রায় তিন বছর পর মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকালে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন উত্তর পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল এলাকার একটি রেস্টুরেন্ট থেকে সিয়ামকে উদ্ধার করা হয়। আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জবানবন্দী নেওয়ার জন্য তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, উদ্ধারের পর শিশু সিয়াম জানায়, রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উত্তর পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল এলাকার পার্শ্ববর্তী আল আমিন রেস্টুরেন্টের সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখে রেস্টুরেন্টের মালিক তাকে কাজে রাখে। সেই সময় রেস্টুরেন্টের মালিক সিয়মের পরিচয় জানতে চায়। কিন্তু পরিবারের তথ্য দিতে সিয়াম ব্যর্থ হয়। এ কারণে বাড়ি ফিরতে পারেনি সিয়াম।

আরএস/এসআর

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!