নখ তুলে নিয়েছে প্লাস দিয়ে—শরীর পুড়িয়ে দিয়েছে সিগারেটের আগুনে
টেকনাফে গহিন পাহাড় থেকে অপহৃত ২২ জন উদ্ধার
কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড় থেকে অপহৃত ২২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২১ জনই রোহিঙ্গা। মুক্তিপণ না পেয়ে তাদের কারো শরীর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সিগারেটের আগুনে, আবার কারো নখ তুলে নিয়েছে প্লাস দিয়ে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) মধ্যরাতে সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা এলাকার করাচিপাড়ার গহীন পাহাড়ে এ অভিযান চালায় র্যাব-১৫। আজ (২৭ অক্টোবর) বিকেলে র্যাব-১৫ সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া অফিসার) সহকারী পুলিশ সুপার আ ম ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মরণনেশা ইয়াবার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাগরপথে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে মানব পাচারকারী চক্র। ২৬ অক্টোবর মধ্যরাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সিপিসি-১, (টেকনাফ ক্যাম্প) র্যাব-১৫ এর একটি দল করাচিপাড়ার গহীন পাহাড়ে অভিযান চালায়। প্রায় তিন ঘণ্টার অভিযানে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্য অপহৃত ২২ জনকে উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ১ জন পুরুষ বাংলাদেশি, বাকিরা রোহিঙ্গা। ২১ রোহিঙ্গার মধ্যে ১০ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৭ জন শিশু।
তিনি আরও জানান, অভিযান চলাকালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা কৌশলে পালিয়ে যায়। তবে ভিকটমদের দেওয়া তথ্য, পাচারকারী চক্রের সদস্যদের নাম শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তারা হলেন— লেঙ্গুরবিল গ্রামের মো. আহমদের ছেলে মো. খলিল (৪৫) ও রাশেদুল ইসলাম (২০), মো. খলিলের স্ত্রী জাহানারা (৪১), হাতিয়ারঘোনা করাচিপাড়া গ্রামের বশর হাজীর ছেলে আব্দুল্লাহ মেম্বার (৩৫), কবির সওদাগরের ছেলে আব্দুল (২৬), মৃত আব্দুস সালামের ছেলে আব্দুর রশিদ (২৮), কবির সওদাগরের ছেলে শহিদুল্লাহ (২২), মো. সোনা আলীর ছেলে ওসমান গণি (২৬) এবং আহমদ মিয়ার ছেলে ইয়াকুব (৩৫)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিম মোবারক (১৭) জানান, গত ১৩ অক্টোবর বিকেলে কক্সবাজার সদর থানাধীন কলাতলী থেকে পলাতক ও অজ্ঞাত আসামিরা তাকে অটোরিকশায় অপহরণ করে। এরপর ঘটনাস্থলে আটকে রেখে মারধর করে এবং তার পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া অন্যান্য রোহিঙ্গা ভিকটিমদেরও বিভিন্ন ক্যাম্প ও পথ থেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। মুক্তিপণ না দিলে তাদের মালয়েশিয়া পাচার করার হুমকি দেয়। মুক্তিপণের টাকা না দেওয়ায় ভিকটিম আমান উল্লাহসহ কয়েকজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের আগুন দিয়ে পুড়ে দেয় এবং প্লাস দিয়ে আঙুলের নখ তুলে ফেলে।
এদিকে এ ঘটনায় পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের সংশ্লিষ্ট ধারাসহ ২০১২ সালের মানবপাচার আইনের ৭/৮/১০ ধারায় টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আলোকিত চট্টগ্রাম

