হোটেল বয় টু ‘পুলিশের এএসপি’, সিআইডি জালে বন্দি—ঠাঁই কারাগারে

ঢাকার বনশ্রীর ব্লু অলিভ রেস্টুরেন্টের ওয়েটার জাকারিয়া । স্কুলের গণ্ডি পেরুতে না পারলেও চুলের কাট ও ড্রেসেআপে সবসময় সুদর্শন এবং স্মার্ট সাজিয়ে রাখে নিজেকে। স্মার্ট চলনবলনে নজরে পড়ে হোটেল ম্যানেজারের। এরপর তাকে ফুডপান্ডা, উবার, ইটস প্রভৃতি অনলাইনে খাবার অর্ডারের জন্য কাজ দেন। হাতে তুলে দেন স্যামসাং ট্যাব। সাড়ে চার হাজার টাকার বেতনে কোনোরকম জীবন চলে তার।

উচ্চভিলাষি স্বপ্নে বিভোর জাকারিয়ার অনলাইনে যোগাযোগ হয় চট্টগ্রামের আবিরের সঙ্গে। আবিরের পরামর্শে ফেসবুকে নিজের পরিচয় বদলে ফেলে জাকারিয়া। এএসপি পরিচয় দিয়ে নিজেকে জাহির করেন সাইবার ফরেনসিক এক্সপার্ট হিসেবে। ক্রিমিনাল জাস্টিসে ভার্জিনিয়া ইউনিভার্সিটিতে পড়ালেখা এবং চিটাগংয়ের প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ডিগ্রি নেওয়ার কথাও বলে বেড়ায় জাকারিয়া।

সিআইডি সাইবার পুলিশ সেন্টারের ফেসবুক পেইজের নিয়মিত ফলোয়ার জাকারিয়া। সব সিনিয়র পুলিশ অফিসারের মোবাইল নম্বর তার সংগ্রহে । পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে ফেসবুকে না থাকলেও কায়দা করে পরিবারের সদস্যদের ফেসবুকে যুক্ত হয়ে নিয়মিত পোস্ট ও ঈদশুভেচ্ছা জানায়।

ফেসবুকে জাকারিয়ার বন্ধুর সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। বেশিরভাগই মেয়ে বন্ধু। অনেকের সঙ্গে প্রেম-পরিণয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে সে।

এএসপি পরিচয়ে গত শুক্রবার (১৪ মে) ঈদের দিন অনার্স পড়ুয়া এক মেয়ে বন্ধুর সঙ্গে হাতিরঝিলে দেখা করে। কিন্তু হায়! জাকারিয়ার উচ্চভিলাষী স্বপ্নের সবশেষ! অনলাইনে নিজেকে হাওয়ায় ভাসালেও অফলাইনে সিআইডির পাতা ফাঁদের জালে পা দিয়ে জাকারিয়া এখন কারাগারের চৌদ্দশিকের ভেতর। দণ্ডবিধি ১৭০ ধারা মোতাবেক সরকারি কর্মকর্তা সাজার জন্য তার দু’বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে।

Yakub Group

আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২৪ ধারা অনুযায়ী, ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে জাকারিয়া অপর কোনো ব্যক্তির পরিচয় ধারণ করার অপরাধ করেছে। এজন্য তার ৫ বছর জেলে হতে পারে, সঙ্গে ৫ লাখ টাকা জরিমানা।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!