২ লাখ টাকায় বেচে দেওয়া সন্তানকে অবশেষে ফিরে পেল মা

রুমা আক্তার কাজের সন্ধানে রাঙ্গুনিয়া থেকে এসেছিলেন চট্টগ্রাম শহরে। তখন নিজের দুবছরের শিশু মিনহাজকে বড় ভাবি শিরিন আক্তারের (৩৮) কাছে রেখেছিলেন রুমা।

এর দুদিন পর রুমার বড় বোন জয়নুব আক্তার রাঙ্গুনিয়ার গ্রামের বাড়ি যান। এ সময় শিশু মিনহাজকে দেখতে না পেয়ে তিনি জানতে চাইলে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন শিরিন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শিরিন দুই লাখ টাকা নিয়ে মিনহাজকে বিক্রি করে দিয়েছেন বোন তাসলিমা আক্তারের (৩৩) কাছে।

এদিকে রুমা তাঁর বুকের ধন মিনহাজকে ফিরিয়ে দিতে বললে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। বেশ কিছুদিন পার হয়ে গেলে সন্তানকে না পেয়ে রুমা পাগলপ্রায়। এরপরও মিনহাজকে ফিরিয়ে আনেননি শিরিন। প্রায় দুমাস পর স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নালিশ দেওয়া হলে তিনিও দিতে পারেননি কোনো সমাধান।

পরে ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর সন্তানকে ফিরে পেতে রুমা আক্তার বাদি হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এতেও সফল হননি। এদিকে মিনহাজের খোঁজে গেলে রুমাকে হুমকি-ধমকি দেন শিরিন। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির ভয়ও দেখান শিরিন।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত তা খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে রুমার বোন জয়নুব আক্তার (৩২) বাদী হয়ে জেলা জজ আদালতে রিভিশন মামলা দায়ের করেন। মামলার ভিত্তিতে বুধবার (২৩ নভেম্বর) জেলা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞা’র আদালতে শুনানি হয়। শুনানির সময় আদালত শিশু মিনহাজকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহানগর পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, প্রায় এক বছর চার মাস পর শিশু সন্তান মিনহাজকে ফিরে পেয়ে রুমা আক্তারের কান্নায় আদালতে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মা-ছেলের মিলনে আদালতে উপস্থিত অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। রিভিশনকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাড. তপন কুমার দাশ, অ্যাড. আল মামুন করিম ও অ্যাড. আজাহারুল হক।

মামলায় অভিযুক্ত শিরিন আক্তার রাঙ্গুনিয়া দক্ষিণ সরফভাটা এলাকার আইল্যার বাড়ির মো. সাইফুলের স্ত্রী। তিনি রুমা আক্তারের বড় ভাইয়ের স্ত্রী। অন্যদিকে মিনহাজকে কেনা তাসলিমা আক্তার (৩৩) একই উপজেলার চন্দ্রঘোনা কদমতলী বনগ্রাম বড়তলী এলাকার মো. আজাদ হোসেনের স্ত্রী।

আরএস/এসআই

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!