সেই ভোলার বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি বাকলিয়ার ওসি, চাঁদাবাজি মামলা হলো আদালতে

এবার নতুন মামলার আসামি হলেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি এহতেসামুল হক ভোলা (৫০)।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) চট্টগ্রাম চতুর্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, মারধরসহ জোরপূর্বক চেক ও স্ট্যাম্প লিখিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মো. শাহজাহান নামের এক ব্যক্তি এ মামলা করেন। আদালত মামলা গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।

মামলার একমাত্র আসামি করা হয়েছে বাকলিয়া রাজাখালী এলাকার মৃত সিরাজুল হকের ছেলে এহতেসামুল হক প্রকাশ ঘর চোর ভোলাইয়াকে।

আরও পড়ুন: ‘এসপি বাবুল আক্তারের বৌ হত্যা’—ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়ল ভোলা

বাদীপক্ষের আইনজীবী মহিউদ্দিন আহমেদ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আসামি ভোলার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। আদালত পিবিআইকে মামলা তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি শাহজাহান একটি জমি কিনেন। চলতি বছরের ২৪ অক্টোবর দুপুর দেড়টার দিকে ক্রয় করা জমি সার্ভেয়ারকে নিয়ে পরিমাপ করতে গেলে ভোলা গ্রুপের হামলার শিকার হন শাহজাহান। এসময় ৩০ থেকে ৪০ জন এসে তাকে তুলে নিয়ে যায় রাজাখালীর ভোলার টর্চার সেল নামে এক গোডাউনে। সেখানে তাকে আটকে রেখে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ভোলা।

পরে বন্দী অবস্থায় শাহজাহানের কাছ থেকে ৫টি খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন ভোলা। এসময় শাহজাহানকে বিবস্ত্র করে পতিতার সঙ্গে ছবিও তোলা হয়। পরে শাহজাহানের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার চেক বই নিয়ে এলে ৫ পাতার চেকে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০ লাখ টাকা টাকা না দিলে ছবি, চেক ও স্ট্যাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকিও দেন ভোলা।

এরপর ছাড়া পেয়ে ভুক্তভোগী শাহজাহান বাকলিয়া থানায় মামলা করতে গেলে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুর রহিমের নির্দেশে এসআই হুমায়ুন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেড় ঘণ্টা তদন্ত শেষে আর মামলা গ্রহণ করেননি। এ ঘটনায় গত ২৫ অক্টোবর বাকলিয়া থানার ওসির বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন শাহজাহান। কিন্তু এরপরও সহায়তা না পাওয়ায় আদালতে মামলা করেন তিনি।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মো. শাহজাহান বলেন, খুন, রাহাজানি, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, অপহরণ ভূমি দখলসহ ৪০টির বেশি মামলার আসামির বশীভূত হয়ে ওসি বাকলিয়া আমার মামলা গ্রহণ করেনি। এমন চিহ্নিত অপরাধীরা পুলিশের সহায়তায় নির্দ্বিধায় অপরাধ করে যাচ্ছে। আমি থানায় গিয়ে বিচার না পাওয়ায় আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।

এ বিষয়ে বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ২৪ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে মো. শাহজাহানের অভিযোগের ভিত্তিতে এসআই হুমায়ুনকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হলে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে এমন কোন অভিযোগের সত্যতা মিলেনি।

এরপর শাহাজাহান ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ফুটেজের কথা বললে এসআই হুমায়ুন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। যার কারণে তার মামলা নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে ভোলাকেও তলব করা হয়েছে বলে জানান ওসি। এসময় ভোলোর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি কিডনী রোগী। জীবনের শেষ সময় পার করছেন তিনি। এ কারণে পাওনাদারদের কাছ থেকে সকল পাওনা আদায়ের জন্য তারা চেষ্টা করছেন। তাছাড়া কার কাছ থেকে কী পাবে সবই তারা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছে। ভোলার কাছ থেকে শাহজাহান ১২টি জায়গার কাগজ নিয়েছে। এ বিষয়ে তাদের মধ্যে কোন্দল হতে পারে— যোগ করেন ওসি।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!