সাঈদীর গায়েবি জানাজায় নিহত ১, চকরিয়া-পেকুয়ায় ওসিসহ আহত ২৮

চকরিয়ায় মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এসময় গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। ভাংচুর করা হয়েছে পুলিশের একাধিক গাড়ি।।

এদিকে পেকুয়ায় জানাজা শেষে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ওসিসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৪টায় চকরিয়ার লামার চিরিংগায় ও একইদিন দুপুর ৩টায় উপজেলার বারবাকিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. ফোরকান (৬০) চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল ফজলের ছেলে। আহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

পেকুয়ায় আহতরা হলেন- পেকুয়া থানার ওসি মো. ওমর হায়দার, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য, উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহিনুল ইসলাম, অমর চন্দ্র বিশ্বাস, মফিজুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. জসিম উদ্দিন, কনস্টেবল আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া, প্রদীপ কুমার দে, মো. সবুর মিয়া, রবি উল্লাহ, ইমরান হোসেন, রামকৃষ্ণ দাশ, তৌহিদুল ইসলাম, রিপন মিয়া ও রিয়াজুল ইসলাম। এদের মধ্যে এসআই শাহিনুল ইসলামের হাত ও অমর চন্দ্র বিশ্বাসের পায়ের আঘাত গুরুতর।

স্থানীয়রা জানায়, চকরিয়া সরকারি হাইস্কুল মাঠে সাঈদীর গায়েবানা জানাজা করার পূর্ব ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু অনুমতি না থাকায় পুলিশ সেখানে জানাজা পড়তে দেয়নি। বিকাল সাড়ে ৪টায় হঠাৎ কয়েক হাজার লোক চকরিয়া পৌরসভার লামার চিরিংগা এলাকায় জড়ো হয়ে জানাজা শুরু করে। এসময় অজ্ঞাত মুখোশধারী অর্ধশত লোক এসে গুলিবর্ষণ শুরু করে। এসময় জানাজা পণ্ড হয়ে গেলে অজ্ঞাত লোকজন গুলি করতে করতে লাঠি দিয়ে কয়েকজনকে মারধর করে। তবে পুলিশ আসার আগেই তারা পালিয়ে যায়। পরে জানাজায় আসা লোকজন ইটপটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশের একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও অপর একটি গাড়ি ভাঙচুর করে।

যোগাযোগ করা হলে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক ছৈয়দ ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। এছাড়া আহত ৭ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আমিসহ পুলিশের ৬ সদস্য আহত হয়েছেন।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম বলেন, জানাজায় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে। তবে গুলিবর্ষণ পুলিশের পক্ষ থেকে করা হয়নি। এ ঘটনায় হতাহত কতজন তদন্ত করে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, নিষেধ সত্ত্বেও স্থান পরিবর্তন করে গায়েবানা জানাজা পড়ে। পরে মিছিল নিয়ে পৌরশহরের মহাসড়কে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় পুলিশ ও পাবলিকের গাড়ি। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহতের ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

পেকুয়া থানার ওসি মো. ওমর হায়দার বলেন, পেকুয়া সদরের একটি মাঠে সাঈদীর গায়েবানা জানাজার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তবে অনুমতি না থাকায় বাধা দেওয়া হয়। পরে বারবাকিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা বদিউল আলম জিহাদির নেতৃত্বে লোকজন বারবাকিয়া বাজারে চলে যায়। সেখানে জানাজার নামাজ শুরু করা হয়। নামাজ চলাকালে হঠাৎ টহল পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে। এরপর জানাজায় অংশ নেওয়া লোকজন হামলা শুরু করে। এসময় আমিসহ ১৫ জন পুলিশ আহত হয়।

এমকেডি/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!