সন্দ্বীপে সেবা সংস্থায় তাণ্ডব চালাল ‘সাংসদের ভাই’, গুঁড়িয়ে দিল প্রধানমন্ত্রীর ছবিও

সন্দ্বীপের স্থানীয় সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতার ছোট ভাই বাউরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের নেতৃতে আত্মমানবতার সেবায় প্রতিষ্ঠিত আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি, আসবাবপত্র ভাংচুরসহ নগদ টাকা লুটপাট করা হয়। এছাড়া ফাউন্ডেশনের দুকর্মীকে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করে হামলাকারীরা।

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সন্দ্বীপ পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, আত্মমানবতার সেবায় প্রতিষ্ঠিত হয় আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনটি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়ার অর্থায়নের পরিচালিত হয়। কিন্তু বাউরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে শতাধিক লোক মিছিল নিয়ে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছে আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা।

হামলাকারীরা ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে থাকা চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করে। এসময় ফাউন্ডেশন কার্যালয়ের দেয়ালে টাঙানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ সব ছবি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। তাদের এমন প্রতিহিংসামূলক আচরণে বাধা দিলে মোহাম্মদ মুন্সি ও রিয়াদকে বেধড়ক মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, আব্দুল কাদের মিয়া সন্দ্বীপ আসনে সাংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ কারণে এ হামলা করা হয়েছে।

এদিকে আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করতে গেলে সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতার ব্যক্তিগত সহকারী ও হারামিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনকে সন্দ্বীপ থানার ওসির রুমে দেখা গেছে। এ ঘটনায় সাংসদ মিতার ছোট ভাইকে এজহারে রেখে মামলা না নেওয়ার জন্য নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে আসছেন বলেও অভিযোগ করেছেন আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের লোকজন।

জানতে চাইলে সন্দ্বীপ থানার অফিসার ইনচার্জ সহিদুল সাগর আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনে হামলার ঘটনা ঘটলেও কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তবে ফাউন্ডেশনের প্রোপাইটর আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আসবেন বলেছেন। তিনি এলে অভিযোগ গ্রহণ করা হবে।

জিল্লুর রহমানের নাম বাদ দিয়ে মামলা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি বলেন, এ পর্যন্ত কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। যদি আসে তবে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হামলার বিষয়ে জানতে বাউরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে নৌকার প্রার্থী জামাল উদ্দীনের বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীকে নির্বাচন করেন জিল্লুর রহমান। সেই সময় নৌকার পক্ষে কাজ করা দুজন সমর্থককে খুন করেন জিল্লুর রহমানের অনুসারীরা।

২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা বাউরিয়া থেকে অন্য কোনো আওয়ামী লীগ নেতাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনতে বাধা দিয়ে এককভাবে তাঁর ছোট ভাই জিল্লুর রহমানকে নৌকার প্রার্থী নির্বাচিত করেন।

আরএস/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!