মৃত্যুঝুঁকি জেনেও সীতাকুণ্ডের পাহাড়ে পাহাড়ে লাখো মানুষ

সীতাকুণ্ডে পাহাড়জুড়ে অবাধে চলছে বসতি স্থাপন। পাহাড়ধসে মৃত্যুঝুঁকি থাকার পরও সরানো যাচ্ছে না এসব পরিবারকে।

উপজেলার ভাটিয়ারী, জঙ্গল সলিমপুর, সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বার আউলিয়া, কুমিরা, বড় দারোগারহাট, বাঁশবাড়ীয়া, মধ্যম মহাদেবপুরসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় রয়েছে লক্ষাধিক মানুষ।

জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড়ধসে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও টনক নড়ছে না এখানকার বাসিন্দাদের। বর্ষা মৌসুমে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হলেও পরে আবার মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস শুরু করে তারা। আবার এসব পরিবারের জন্য সাবাড় হচ্ছে পাহাড়, ঘটছে পরিবেশ বিপর্যয়।

জঙ্গল সলিমপুর গ্রামে দুই দশকে পাহাড়ধসে প্রাণ গেছে ২২ জনের। এরমধ্যে ২০১৭ সালেই এখানে শিশুসহ ৫ জন মারা যায়। এ গ্রামটির পাহাড়ে প্রায় ২০ হাজার পরিবার বাস করে বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা বাস্তুহারা পরিবারগুলো পাহাড়টি দখল করে আছে। এছাড়া দিনমজুর, রিকশাচালক, স্থানীয় জুটমিল, টেক্সটাইল মিলের চাকরিজীবী, ভিক্ষাবৃত্তি করে চলে এমন মানুষ পরিবার নিয়ে বসতি গড়ে পাহাড়গুলোকে নিজেদের ‘সাম্রাজ্য’ বানিয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন পাহাড় ঘুরে সরেজমিন দেখা গেছে, শুধুমাত্র জঙ্গল সলিমপুরের পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করেছে হাজার হাজার পরিবার। মৃত্যুঝুঁকি থাকার পরও প্রতিনিয়ত এখানে বাড়ছে পরিবারের সংখ্যা। ২০১৭ সালে এখানে প্রায় ১০ হাজার পরিবার বাস করলেও চার বছর পর এসে সেই সংখ্যা এখন দ্বিগুণ হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে রোববার (৬ জুন) ৩০টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জঙ্গল সলিমপুর, কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, ভাটিয়ারী, পৌরসভার মধ্যম মহাদেবপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানের পাহাড়ে বসবাসরতদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে।

এদিকে পাহাড়ধসের শঙ্কা রয়েছে ত্রিপুরা পল্লীতেও।

ত্রিপুরা পল্লীর সর্দার কাঞ্চন ত্রিপুরা বলেন, পাহাড়ে আর থাকতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু আমরা সমতলে আসতে চাইলেও কেউ আমাদের জায়গা দিচ্ছে না। কোনোরকম মাটি ও টিনের ছোট ছোট ঘর তৈরি করে বসবাস করছি এখানে।

সীতাকুণ্ডে রোববার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ভারী বৃষ্টির কারণে বেড়েছে পাহাড়ধসের শঙ্কাও। মৃত্যুঝুঁকিতে থাকা এসব লোকজনকে সরিয়ে নিতে যদি প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা না নেন তাহলে যেকোনো সময় বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন সচেতনমহল।

ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!