হঠাৎ আলোচনায় ‘মিশ্র বিধিনিষেধ’

করোনা সংক্রমণের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি, লকডাউন, কঠোর বিধিনিষেধ, শিথিল বিধিনিষেধ থেকে শুরু করে অনেক নির্দেশনাই দেখেছে দেশ। এবার টানা ১৪ দিন কঠোর বিধিনিষেধের পর, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় নিয়ে সরকারের চিন্তাভাবনা রয়েছে কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শনাক্তের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই দেশের অর্থনীতি ও মানুষের আয়-উপার্জনের বিষয়টিও ভাবতে হচ্ছে সরকারকে। তাই ৫ আগস্ট কঠোর বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার পর কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় আছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নীতি-নির্ধারকদের সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যেও ইঙ্গিত মিলেছে তেমনটাই।

সেক্ষেত্রে কিছু ক্ষেত্রে ছাড়, কিছু ক্ষেত্রে কড়াকড়ি- এমন ‘মিশ্র বিধিনিষেধ’-এর নির্দেশনা এলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এর অংশ হিসাবে ইতোমধ্যেই ১ আগস্ট থেকে গার্মেন্টসসহ রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে সরকার। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

৫ আগস্ট পরবর্তী সময় নিয়ে সরকারের চিন্তাভাবনার বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত রপ্তানিমুখী শিল্প-কলকারখানা খুলে দিচ্ছি। সেটাও সীমিত পরিসরে।

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর কী হবে আমরা সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেইনি। প্রধানমন্ত্রী এখনও সিদ্ধান্ত দেননি। আগামী ৩ আগস্ট সিদ্ধান্ত জানানোর চেষ্টা করব। ওইদিন না হলে ৪ আগস্ট সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।

আরও পড়ুন: ৫ আগস্টের পর আবার ‘লকডাউনে’র সুপারিশ

এদিকে ৫ আগস্টের পর কঠোর বিধিনিষেধ আবার বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম শুক্রবার (৩০ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি জানান।

আরও ১০ দিন আগেই কেবিনেট মিটিংয়ে বিধিনিষেধ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, আমরা কীভাবে এই সংক্রমণ সামাল দেব? রোগীদের কোথায় জায়গা দেব?

ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, সংক্রমণ যদি এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে কি পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব? অবস্থা খুবই খারাপ হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। এসব বিবেচনাতেই আমরা বিধিনিষেধ বাড়ানোর সুপারিশ করেছি।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা কঠোর বিধিনিষেধের পক্ষে কথা বললেও মানুষের জীবিকার বিষয়টিও ভাবতে হচ্ছে সরকারকে।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সংক্রমণ কমাতে বিশেষজ্ঞরা লকডাউনের পক্ষে বললেও তা আবার মানুষকে জীবিকার সংকটে ফেলছে। বিষয়টি নিয়েও সরকারকে ভাবতে হচ্ছে।

সবমিলিয়ে চলতি দফার কঠোর বিধিনিষেধ শেষে করণীয় নিয়ে কী সিদ্ধান্ত আসছে তা জানতে আগামী কয়েকদিন অপেক্ষা করতেই হচ্ছে। তবে কঠোর-শিথিল মিলিয়ে মিশ্র বিধিনিষেধেই আপাত সমাধান দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এবারের ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ চলবে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত।

জেডএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!