৪৫ বছর আগে লবণসহ বোট আত্মসাতের চেষ্টায় বোটের মালিকের ছেলেকে মাঝ সাগরে খুনের মামলায় ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (সিনিয়র দায়রা জজ) মো. সেলিম মিয়া এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পটিয়া শিকলবাহা এলাকার হাজী এবাদ আলীর ছেলে মো. আবদুস সাত্তার, বরিশাল ভোলা থানার নবীপুর এলাকার সানাউল্লার ছেলে মো. ইব্রাহিম, কক্সবাজার রামু থানার মুক্তারপুল গ্রামের খুরুলিয়া কালাম আহাম্মদের ছেলে মো. শফি, সন্দ্বীপ দক্ষিণ শুলাবাহার এলাকার মো. মিয়ার ছেলে বেচু মিয়া, নোয়াখালী হাতিয়া থানার বাংলাবাজার উচ্চ খালি এলাকার আবদুর রশিদের ছেলে রুহুল আমিন, বরিশাল লালমোহন থানার ইদ্রিছ মিয়া লাটিয়ালের ছেলে মো. খোরশেদ আলী ও একই বিভাগের দৌলতখান থানার জুঁইনগর এলাকার আবুল বেপারির ছেলে আবদুল মতিন।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরাপল্লীর ২ কিশোরীকে ধর্ষণের পর খুন—হোসেনের মৃত্যুদণ্ড, মানিক মুক্ত
এ বিষয়ে আদালতের বেঞ্চ সহকারী বলেন, সাত আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আসামিদের হাজতবাসকালীন সময় দণ্ডাদেশের মেয়াদ থেকে বাদ যাবে। পরে আসামিদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৭ সালের ১৫ আগস্ট কক্সবাজারের ভারুয়াখালী থেকে সমুদ্রপথে ৩ হাজার ৫শ’ মণ লবণবোঝাই বোট নিয়ে চাঁদপুর যাওয়ার সময় বোটের মালিকের ছেলে ছুরত আলমের সঙ্গে অন্যদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কর্ণফুলীর মোহনায় ছুরতকে মারধর করে ফেলে দেয়। এসময় বোটের মাল্লা মোহাম্মদ হোসেন চিৎকার করলে আসামিরা তাকেও মারধর করে। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সমুদ্রে ফেলে দেয়। এসময় মাল্লা মোহাম্মদ হোসেন একটি জাহাজে আশ্রয় নেয়। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন জাহাজের কর্মচারীরা।
এদিকে ঘটনার ছয়দিন পর মাল্লা মোহাম্মদ হোসেন এলাকায় ফিরে বিষয়টি জানালে বোটের মালিক আলী হোসেন বাদী হয়ে কক্সবাজার থানায় আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় বোটের দাম ১ লাখ টাকাসহ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার লবণ ও নগদ টাকা আত্মসাতের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এ মামলায় ২০০২ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পরের বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি মামলার চার্জ গঠন হয়। এ মামলায় ৯ জন সাক্ষ্য দেন।