বে ওয়ান ক্রুজের ‘ভয়ঙ্কর’ স্মৃতি নিয়ে সেন্টমার্টিন থেকে ফিরল ১৩০০ পর্যটক

গভীর সমুদ্রে আটকে ছিল ১৪ ঘণ্টা

১৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পর সেন্টমার্টিন থেকে কক্সবাজারে ফিরেছে পর্যটকবাহী জাহাজ বে ওয়ানের যাত্রীরা। এর আগে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে হাজারো পর্যটক নিয়ে বে ওয়ান নামের জাহাজটিতে আগুনের ঘটনা ঘটেছিল।

এদিকে সেন্টমার্টিন থেকে মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ৩টায় কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে জাহাজটি। রাত ৯টার দিকে গভীর সমুদ্রে আটকে যায় এটি। জাহাজটিতে ১ হাজার ৩০০ পর্যটক ছিল।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার কিছু পর কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটি এ ঘাটে আসে বে ওয়ান থেকে পর্যটকদের নেওয়া হয় বার আউলিয়া জাহাজে। ফেরত আসা যাত্রীরা এসময় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

বিশেষ করে নারী পর্যটকেরা জানান, ছোট বাচ্চা আর বয়স্ক মানুষের ভোগান্তি ছিল চরমে। অনেকে বসার জায়গা না পাওয়ায় ১৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ফেরত এসেছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

ওই জাহাজে থাকা এক চিকিৎসক দম্পতি জানান, জাহাজ কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা আর অসহযোগিতা ছিল। জাহাজের ১৫ শতাংশ যাত্রীকে খাবার দেওয়া হয়েছে।

এই চিকিৎসক দম্পতি বলেন, আগের দিন ভোর ৫টায় তারা ঘাটে আসে সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য। আর ফিরেছে পরদিন ভোর ৫টায়। সেন্টমার্টিন দেখার সুযোগও হলো না। মাত্র ৪৫ মিনিট দ্বীপে অবস্থান করার সুযোগ হয়েছিল।

ঢাকা থেকে আসা আরেক দম্পতি জানান, সমুদ্র উত্তাল ছিল, এসময় বারবার বলার পরও কর্তৃপক্ষ লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করেনি। সেই সঙ্গে তিনটি সিংগারার দাম রাখা হয়েছে ১০০ টাকা, খিচুড়ির দাম রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা।

আরেক পর্যটক জানান, তিনি সাড়ে ৭ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কিনেছেন কেবিনের। তাকে খাবারও দেওয়া হয়নি। তাঁর স্ত্রী জানান, বাচ্চাদের নিয়ে রাতভর সমুদ্রে ভয়ঙ্কর এক অভিজ্ঞতা হলো।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে কর্ণফুলী ক্রুজ লাইনের কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম জানান, জোয়ার-ভাটা জনিত কারণে কক্সবাজার থেকে বারো আউলিয়া জাহাজে করে গভীর সমুদ্র থেকে কক্সবাজার ঘাটে যাত্রীদের ফেরত আনতে সময় লেগেছে।

এতে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করার মতো পরিস্থিতি হয়নি বলেই লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয়নি। জাহাজে পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট ছিল।

সব যাত্রী খাবার না পাওয়া নিয়ে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, সবাইকে খাবার দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

খাবারের অতিরিক্ত দাম নেওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাহাজের খাবারের দোকান কর্তৃপক্ষ অন্যজনকে ভাড়া দিয়েছে, এখানে জাহাজ কর্তৃপক্ষের কোনো হাত নেই।

তিনি বলেন, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, দুর্ঘটনা নয়। সকল যাত্রী নিরাপদে ফিরেছে এবং এরকম সমস্যা আর হবে না।

জানা যায়, টেকনাফ থেকে সেন্টমাটিন নৌরুটের কিছু অংশে নাব্যতা সংকটের কারণে জাহাজ চলাচল এ বছর বন্ধ রয়েছে।

কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন দুটো জাহাজ সেন্টমাটিন যাতায়াত করে পর্যটকদের নিয়ে। তবে প্রায়শ জাহাজ পৌঁছাতে দেরিসহ নানা অভিযোগ শোনা যায় পর্যটকদের কাছ থেকে।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!