ফটিকছড়িতে ফুঁ দিলেই মিলে লাখ লাখ টাকা

ফটিকছড়িতে বেড়েছে ভুয়া বৈদ্যের দৌরাত্ম্য। এসব ভণ্ড বৈদ্য ফুঁ দিয়েই হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। তাদের খপ্পড়ে পড়ে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ভুয়া বৈদ্যরা এলাকায় একটি আস্তানা গড়ে তুলেন। সেখানে কয়েকজন দালাল রাখা হয়। তারাই সাধারণ মানুষকে এসব বৈদ্যের কাছে নিয়ে আসেন সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার কথা বলে। এসময় সমস্যা সমাধানে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করা হয় তাবিজ-কবজ দেওয়ার কথা বলে। গ্রামের সহজ-সরল মানুষ এদের কথায় রোগমুক্তিসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের আশায় দাবি করা টাকা তুলে দেন। কিন্তু সুফল তো দূরে থাকুক ভুক্তভোগীরা বৈদ্যবাড়িতে ঘোরাঘুরি করে খোয়াতে থাকেন টাকা। প্রতারণার জন্য নতুন নতুন ফাঁদ পাতেন এসব বৈদ্য। অনেক সময় ভয় দেখিয়েও তারা হাতিয়ে নেন অর্থ।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বিবাহ উপযুক্ত মেয়ের বিয়ে না হওয়া, দীর্ঘদিন সন্তান না হওয়া, বিদেশ যাওয়া, পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য কলম পড়া, তাবিজ-কবজ দেওয়াসহ নানা প্রতারণায় টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভুয়া বৈদ্যরা। তাবিজ দেওয়ার নামেই চলছে তাদের ধোকাবাজি।

এ বিষয়ে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ এলাকার চা দোকানি মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ইদানিং এলাকায় কয়েকটি দোকানে আস্তানা করেছে ভুয়া বৈদ্যরা। পানি পড়া, ঝাড়ফুঁকসহ বিভিন্ন কাজ করিয়ে দেওয়ার নামে তারা প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে বড় অঙ্কের টাকা। সাধারণ মানুষ তাদের ফাঁদে পড়ে টাকা দিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন।

আরও পড়ুন : ফটিকছড়িতে ‘ডাক্তার’ সেজে রোগীর চিকিৎসা করে ২ ভণ্ড

বিবিরহাটের ব্যাংক কর্মকর্তা জয়জিৎ তালুকদার বলেন, এলাকায় একাধিক ভুয়া বৈদ্য আস্তানা গেড়ে বসেছেন। চিকিৎসার নামে তারা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

প্রবাসীর স্ত্রী রিনা আকতার বলেন, পুরুষের পাশাপাশি বিভিন্ন মহিলারাও বৈদ্য সেজে গ্রামের সহজ-সরল নারীদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। এদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অস্বীকার করেন নাজিরহাটের কথিত বৈদ্য অহিদুল আলম। তিনি বলেন, অনেকের রোগ ভালো হচ্ছে বলে প্রতিদিন আমার এখানে মানুষের ভিড় লেগে থাকে।

নানুপুরের মহিলা বৈদ্য (মহিলা হুজুর) নামে পরিচিত রোজিনা আকতার নিজেকে একজন পরহেজগার দাবি করে বলেন, যা কিছু করি আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে করি। এতে সাধারণ মানুষ লাভবান হয় বলে বারবার আমার কাছে আসে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ফটিকছড়ি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইকবাল হোসেন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, এরা ধর্মের দোহাই দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করার অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যোগাযোগ করা হলে ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল হুদা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, কথিত বৈদ্যরা যা করছে সবকিছুই অবৈধ। তাদের বিরুদ্ধে লিখিত কেউ অভিযোগ করেন না। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!