চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে পড়ল সেবাশ্রমে, টাকা ছাড়া ধসে পড়া মাটি সরাতে অনীহা রেঞ্জ কর্তার

নগরে বন বিভাগের পাহাড়ধসে গাছ পড়ে পঞ্চমাতা বিগ্রহ বাড়ি ও সেবাশ্রম ভবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ভাগ্যক্রমে এ ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে গাছ পড়ার ঘটনা জানাতে গেলে ভুক্তভোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে রেঞ্জ অফিসারের বিরুদ্ধে। তবে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

রোববার (২৭ আগস্ট) বেলা ১২ টার দিকে আন্দরকিল্লা এলাকার রাজাপুর লেইনে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে।

৫১৩, ডি আর ভবনের শ্রীশ্রী পঞ্চমাতা বিগ্রহ বাড়ি ও সেবাশ্রম ভবনে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পাহাড়ধসে ঘরের বারান্দার দেয়াল, গ্রিল ও পাশে থাকা জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে। একটি নারকেল গাছ ভবনের এসির আউটবক্সে হেলে পড়েছে। তবে এসময় এসি বন্ধ থাকায় বাসিন্দাদের কোনো ক্ষতি হয়নি।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে বাবা-মেয়ের মৃত্যুর পরে ঘুম ভাঙল জেলা প্রশাসনের, ৪০ ঘরে বুলডোজার

এরপর ভবনের ছাদে উঠে দেখা যায়, পাহাড়ধসে বন বিভাগের দেয়াল ভেঙে পড়েছে। একটি বিশাল নারকেল গাছ উপড়ে পড়েছে ভবনের ওপর। পাশে অন্য একটি গাছও ভবনের দিকে ঝুঁকে রয়েছে। সেটিও যেকোনো মুহূর্তে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। এছাড়া আরও একটি গাছ পড়েছে বন বিভাগের সীমানায়।

এ বিষয়ে সেবাশ্রমের শ্রীমৎ প্রেমময় আনন্দ ব্রহ্মচারী বলেন, গত তিন বছর ধরে ভেঙে পড়া গাছগুলো অপসারণের জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও বন বিভাগ আমাদের কথায় কর্ণপাত করেননি। আজ ভবনে গাছ পড়ার বিষয়টি জানাতে গেলে সোমা শীলের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার আব্দুল মালেক। এরপর পরিদর্শনে এসে গাছগুলো অপসারণের জন্য ছয় হাজার টাকা দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, গত বছর পাশের ভবনেরও একটি গাছ হেলে পড়েছিল। সেই সময় এটি অপসারণ করতে বললে তারা করেননি। পরে আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে অপসারণ করতে চাইলে তাদের কর্মীরা করতে দেয়নি। এরপর পাশের এক ভবন মালিক নিজস্ব অর্থায়নে তার ভবনের ওপরে থাকা গাছের ঢাল-পালা অপসারণ করেন।

এদিকে ভুক্তভোগী সোমা শীল বলেন, বন বিভাগে গিয়ে রেঞ্জ অফিসার আব্দুল মালেককে ভবনে গাছ হেলে পড়ার বিষয়ে জানালে তিনি বলেন, ‘এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এটি সম্পূর্ণ ঠিক করতে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন হতে পারে। এটি সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করবো।’

সোমা বলেন, এর আগে রাজু নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বহুবার যোগাযোগ করেছি। তিনি গাছ কাটাবে বলে কালক্ষেপণ করেন। পরে রেঞ্জ অফিসারের সামনেই রাজুকে এসব বিষয় মনে করিয়ে দিলে তিনি আমাকে অফিস থেকে বের করে দিতে বলেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম অঞ্চল নন্দনকানন বন সংরক্ষকের কার্যালয়ের রেঞ্জ অফিসার আব্দুল মালেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ভারী বর্ষণে পাহাড় ধস হয়েছে। তবে পূর্বে কারো কোনো অভিযোগ পাইনি। আজ জানার পর আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।

কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে গাছ অপসারণ সম্ভব নয়। বৃষ্টির মধ্যে শ্রমিকেরা গাছে উঠতে চাই না। বৃষ্টি কমলে আশপাশে হেলে পড়া গাছগুলো অপসারণ করা হবে।

টাকা দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব মিথ্যা কথা। এ ধরণের কোনো কথা কাউকে বলিনি।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!