চট্টগ্রামে পচা মাংস দিয়ে বিরিয়ানি বানায় ‘বাংলার সেরা’ হাজী বিরিয়ানী হাউজ

‘বাংলার সেরা’ স্লোগানে চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করে হাজী বিরিয়ানী হাউজ। নগরজুড়ে বেশ কয়েকটি শাখাও রয়েছে এর। দিনজুড়ে জমজমাট বিক্রি হয় কাচ্চি বিরিয়ানি, দম বিরিয়ানি, ওরস বিরিয়ানি ও তেহেরি। তবে কী দিয়ে এই বিরিয়ানি বানানো হয় তা জানলে চোখ কপালে উঠবে সবার। ভোক্তা অধিকারের অভিযানে ধরা পড়েছে হাজী বিরিয়ানীর থলের বিড়াল।

পচা মাংস ও অননুমোদিত কেমিক্যাল দিয়ে অপরিষ্কার ও নোংরা পরিবেশে বিরিয়ানি তৈরি করে হাজী বিরিয়ানী। অভিযানে বিষয়টি ধরা পড়ার পর মালিক হাজী নাজমুল বিশ্বাসকে লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় নগরের চকবাজার এলাকায় এ অভিযান চালান ভোক্তা অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রানা দেব নাথ ও আনিছুর রহমান। অভিযানে সহায়তা করে চকবাজার থানা পুলিশ।

আরও পড়ুন : এবার চট্টগ্রাম ধরা খেল বনফুল, হাজী বিরিয়ানী হাউজ, সুবাহ ফুড

জানা যায়, হাজী বিরিয়ানী হাউসে পচা মাংস ও অননুমোদিত কেমিক্যাল দিয়ে অপরিষ্কার ও নোংরা পরিবেশে ওরশ বিরিয়ানি ও তেহেরি তৈরি করা হয়। এমন অভিযোগে সেখানে অভিযান চালানো হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রানা দেব নাথ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, চকবাজার থানার পচা মাংস জব্দের অভিযোগে আমরা আজ দুপুরে সেখানে অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে দোকানে পচা মাংস দিয়ে বিরিয়ানি তৈরি ও ক্ষতিকর কেমিক্যাল পায়। এসব অভিযোগে প্রতিষ্ঠান মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে তিনদিনের জন্য প্রতিষ্ঠানটি সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের আরও শাখা রয়েছে নগরের বিভিন্ন এলাকায়। নগরের কোতোয়ালী, বহদ্দারহাট, নতুন ব্রিজ, কোতোয়ালী, আন্দরকিল্লা ও কদমতলীতে রয়েছে তাদের শাখা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে নগরের প্যারেড কর্ণার এলাকা থেকে একটি অটোরিকশা আটকের পর সেখান থেকে তিন বস্তা পচা মাংস জব্দ করে চকবাজার থানা পুলিশ। এসব মাংসের গন্তব্য ছিল সেই হাজী বিরিয়ানী হাউজ।

পচা মাংস উদ্ধারের পরদিন শনিবার সকাল থেকে হাজী বিরিয়ানী হাউজ বন্ধ রাখা হয়। তবে পচা মাংসের বিষয়টি অস্বীকার করেন প্রতিষ্ঠানের মালিক।

আরও পড়ুন : এবার ধরা খেল ফুলকলি এবিপি হাজী বিরিয়ানী, চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসনের ২২ মামলা

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে হাজী বিরিয়ানি হাউজের মালিক হাজী নাজমুল বিশ্বাস আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, পচা মাংসগুলো আমাদের দোকানের না। আমরা চকবাজার থেকে মাংস নিয়ে বিক্রি করি।

দোকান বন্ধ রাখার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বোনের বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে এসেছি পরিবার নিয়ে।

ওইদিন পচা মাংস আটক করা চকবাজার থানার এএসআই মো. সাইফুদ্দিন মানিকের মুঠোফোনে একধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। পরে তাঁর ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে খুদে বার্তা পাঠিয়েও মিলেনি সাড়া।

পরে চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ওয়ালী উদ্দিন আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাজী বিরিয়ানী হাউসে পচা মাংস মজুত করার গোপন সংবাদ পায়। পরে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মাধ্যমে সেখানে অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে দোকান মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি সাময়িক বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!