‘নেতার দাপট’—চট্টগ্রামে রেলের এক স্টেশন মাস্টার দেড় যুগে ‘বদলি’ হননি কোথাও

১৮ বছর ধরে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে পড়ে আছেন স্টেশন মাস্টার (গ্রেড-৩) মো. শফিকুল ইসলাম। এরমধ্যে তাঁর বদলির সুপারিশ হলেও ক্ষমতার দাপটে রয়ে গেছেন এক জায়গায়। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে টিকিট ‘কালোবাজারি’তে জড়িত থাকার অভিযোগও।

জানা গেছে, ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে সহকারী স্টেশন মাস্টার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন মো. শফিকুল ইসলাম। এরপর টানা চাকরি করে যাচ্ছেন চট্টগ্রামে। এরমধ্যে ২০১০ সালে মিরসরাইয়ে একবার বদলি হলেও সেই স্টেশন বন্ধ থাকায় গ্রেড বাড়িয়ে তাঁকে আবারও চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে রাখা হয়।

চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে শুধু প্লাটফর্ম স্টেশন মাস্টার হিসেবে তিনি কাটিয়েছেন ১২ বছর। এছাড়া জংশন কেবিনে ২ বছরসহ বর্তমানে স্টেশন মাস্টার গ্রেড-৩ হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি।

তাঁর বিরুদ্ধে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগও রয়েছে। এ নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে তাঁর নাম। বর্তমানে তিনি আনোয়ারা উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সহসভাপতি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, শফিকুল ইসলাম একটানা ১৮ বছর ধরে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে আছেন। বর্তমানে তিনি ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে দাপট দেখান।

এ ব্যাপরে সচেতন নাগরিক কমিটির চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, কোন ক্ষমতাবলে একজন সরকারি চাকরিজীবী ১৮ বছর ধরে এক জায়গায় থাকেন, তা বলা কঠিন। যদিও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তিন বছরের বেশি থাকার কথা নয়। এতে সৎ কর্মকর্তাদের ওপরও প্রভাব পড়বে। এক্ষেত্রে তাঁর ঊর্ধতন কর্মকর্তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনা জরুরি।

জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেব। প্রধান পরিবহন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলব৷ আপনি তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারেন।

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মো. শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমার চাকরি নিয়ে কী সমস্যা? আমি অফিসের বাইরে কাজে এসেছি। কোনো কিছু জানতে হলে অফিসে আসেন।

অপরদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম রেলওয়ের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামকে একাধিক ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে সংবাদ প্রকাশের পর চট্টগ্রাম রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মো. শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, একনাগাড়ে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে ১৮ বছর ধরে চাকরি করার বিষয়টি সঠিক নয়। আড়াই বছর আগে আমি চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যোগ দিয়েছি।

এর আগে কোথায় ছিলেন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিভিন্ন স্টেশনে চাকরির পর আবারও চট্টগ্রামে যোগ দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ডিউটি শেষে আমার মোবাইল প্রায়সময় বন্ধ থাকে। এছাড়া প্রতিবেদক যখন আমাকে ফোন করেছিলেন ওইসময় আমি নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল রোগী নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তাই প্রতিবেদককে অফিসে এসে কথা বলতে বলেছিলাম।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!