দেবীপক্ষের সূচনা—শুভ মহালয়া আজ

দেবীপক্ষের সূচনা শুভ মহালয়া আজ বুধবার (৬ অক্টোবর)। পুরাণমতে, এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। মহালয়ার অর্থ— মহান আলোয় দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে আবাহন। চণ্ডী পাঠের মধ্যদিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত।

আজ মহালয়ার মধ্য দয়ে শুরু হবে দুর্গোৎসবের সূচনা ও সময় গণনা। আজকের এই দিনে দেবীকে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে আসার আহ্বান জানিয়ে পূজা, চণ্ডী পাঠ ছাড়াও নানা আয়োজন রয়েছে মণ্ডপে মণ্ডপে।

শাস্ত্র মতে, ত্রেতা যুগে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র অকালে দেবীকে আরাধনা করেছিলেন লঙ্কা জয় করে সীতাকে উদ্ধারের জন্য। শ্রীরামচন্দ্র অকালে-অসময়ে পূজা করেছিলেন বলে এই শরতের পূজাকে দেবীর অকালবোধন বলা হয়। মূল দুর্গাপূজা হলো বসন্তে, সেটাকে বাসন্তী পূজা বলা হয়।

আরও পড়ুন: দুর্গাপূজায় বাধা, হিন্দুদের হাজারো লোক ঘেরাও করল কৈবল্যধাম মন্দির

মহালয়া শব্দের সন্ধি হলো মহা+আলয়। মহা শব্দের অর্থ বিশাল এবং আলয় শব্দের বাড়ি বা গৃহ। দুর্গাপূজার দুই পক্ষের একটি পক্ষ হলো পিতৃপক্ষ, অন্যটি দেবীপক্ষ। পিতৃপক্ষের অবসান শেষে সূচনা হয় দেবীপক্ষের।

সনাতন ধর্মে তিনটি অমাবস্যার কথা উল্লেখ রয়েছে। এগুলো হলো আলোক অমাবস্যা, মহালয়া অমাবস্যা এবং দীপান্বিতা অমাবস্যা। অমাবস্যা স্ত্রী লিঙ্গবাচক শব্দ। মহালয়া অমাবস্যা হয় আশ্বিন মাসে। অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের শেষ হয়, আর পরের দিন প্রতিপদ তিথিতে শুরু হয় দেবীপক্ষের।

সনাতন ধর্মে কোনো শুভ কাজ করতে গেলে, বিবাহ করতে গেলে প্রয়াত পূর্বরা, যাদের পিতা-মাতা তাদের পিতা-মাতার জন্য, সাথে সমগ্র জীব-জগতের জন্য তর্পণ করতে হয়, কার্যাদি-অঞ্জলি প্রদান করতে হয়। তর্পণ মানে খুশি করা। সেই অনুসারে এই মহালয়া তিথিতে যারা পিতৃ-মাতৃহীন তারা পূর্বপুরুষকে স্মরণ করে, পূর্বপুরুষের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন।

সনাতন ধর্ম অনুসারে এই দিনে প্রয়াত আত্মাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রয়াত আত্মার যে সমাবেশ হয় তাকে মহালয় বলা হয়। মহালয় থেকে মহালয়া। পিতৃপক্ষেরও শেষদিন এটি।

আরও পড়ুন: রঙ—তুলিতে সাজছে মা, করোনার ক্ষত সারাতে ব্যস্ত অমল সুজন সুশান্তরা

পঞ্জিকা মতে, এবার দেবী দুর্গার আগমন ঘোটকে এবং গমন দোলায়। ১০ অক্টোবর (রোববার) বোধন ও ১১ অক্টোবর (সোমবার) ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। ১৫ অক্টোবর (শুক্রবার) বিজয়া দশমীতে বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ এই ধর্মীয় উৎসব।

মহালয়া উপলক্ষে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে আয়োজনে রয়েছে-চণ্ডীপাঠ, আরতি, সঙ্গীতানুষ্ঠান, প্রদীপ প্রজ্বলন, আলোচনা সভা, বস্ত্র ও প্রসাদ বিতরণ।

এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ জে এম সেন হল প্রাঙ্গণে নানা আয়োজনে মহালয়া উদ্‌যাপন করবেন বলে জানিয়েছেন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য।

অন্যদিকে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা বোয়ালখালীর মেধস আশ্রমে দিনব্যাপী নানা আয়োজনে মহালয়া উদ্‌যাপন করবেন বলে জানান পরিষদের সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!