দুর্গাপূজায় মণ্ডপে ২০ জনের বেশি নয়, মানতে হবে সিএমপির ৩২ নির্দেশ

আসন্ন দুর্গাপূজা মণ্ডপের ভেতর একসঙ্গে ২০ জনের বেশি দর্শনার্থী অবস্থান করতে পারবে না। করোনা সংক্রমণ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় ৩২ দফা নির্দেশনা দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) সকালে সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়ের সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের মতবিনিময় সভা হয়। পরে সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার নির্দেশনাগুলো তুলে ধরেন।

সিএমপি’র নির্দেশনার মধ্যে আছে— পূজামণ্ডপের প্রবেশমুখে পুরুষ ও নারীর জন্য পৃথক হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও থার্মাল স্ক্যানার রাখা, পূজামণ্ডপে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ, মণ্ডপের চারদিকে বা ওপরের অংশ উন্মুক্ত রাখতে হবে, প্রতিমা প্যান্ডেলের আশপাশে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং মণ্ডপের প্রবেশমুখে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা এবং সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও ভিডিও ফুটেজ রেকর্ড করতে হবে।

এদিকে মণ্ডপের ভেতর একসঙ্গে ২০ জনের বেশি দর্শনার্থী অবস্থান করতে পারবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছে সিএমপি।

এছাড়া জরুরি সেবার ফোন ও মোবাইল নম্বর সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়ে সিএমপি বলেছে, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের জরুরি সেবার নম্বরগুলো দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে জেনারেটর প্রস্তুত রাখতে হবে। বিদ্যুতের ত্রুটিপূর্ণ সংযোগ দ্রুত মেরামত করতে হবে। সার্বক্ষণিক একজন ইলেকট্রিশিয়ান নিয়োগ করতে হবে।

একইসঙ্গে নিরাপদ স্থানে পূজামণ্ডপ স্থাপনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। মণ্ডপসমূহে অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা হিসেবে ফায়ার এক্সটিংগুইসার, পানি ও বালি ইত্যাদি রাখতে হবে।

হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ে ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে সিএমপির নির্দেশনায়। বলা হয়েছে, অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা থাকতে হবে, রাখতে হবে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা। মন্দির বা পূজামণ্ডপে কোনো ধরনের থিম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা ডিজে পার্টির আয়োজন করা যাবে না। আজান ও নামাজের সময় সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখতে হবে।

পূজা কমিটি নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব থাকলে নিজেরা অথবা মহানগর পূজা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে মীমাংসা করতে বলেছে সিএমপি। এরকম কিছু থাকলে যেন এর কোনো প্রভাব পূজা চলাকালীন না পড়ে, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

সিএমপি নির্দেশনা দিয়ে বলেছে, অজ্ঞানপার্টি ও মলমপার্টি থেকে সতর্ক থাকতে হবে। অপরিচিত ব্যক্তির দেওয়া কিছু খাওয়া বা পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া যত্রতত্র গাড়ি রাখা যাবে না। নারীদের যৌন হয়রানি বা উত্ত্যক্তের বিরুদ্ধে ও প্রতিরোধে মণ্ডপ কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং পুলিশকে জানাতে হবে। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক প্রবেশ ও নির্গমন পথ রাখতে হবে। মহিলা স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে।

পূজামণ্ডপের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে সার্বক্ষণিক নারী ও পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করার নির্দেশনা দিয়ে সিএমপি বলেছে, স্বেচ্ছাসেবকদের চেনার সুবিধার্থে নির্দিষ্ট পোশাকের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবকদের নামের তালিকা স্থানীয় থানার ওসিকে দিতে হবে।

সিএমপি জানিয়েছে, যেকোনো ঘটনার সংবাদ দ্রুততার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিতে হবে। মাদক গ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পূজা মণ্ডপের আশপাশে মেলা বা জুয়ার আসর বসানো যাবে না। আতশবাজি-পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকতে হবে। ফেসবুকে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অথবা লোকমুখে যেকোনো ধরনের গুজব বা অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ে নিকটস্থ থানায় অবহিত করতে হবে। আগামী ৫ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করতে হবে।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!