পুলিশের তদন্তে পার পেলেও ডিএনএ টেস্টে ধরা খেল ধর্ষক

জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের তদন্তে ধর্ষণ মামলার আসামি পার পেলেও ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণিত হয় শিশু ধর্ষণের ঘটনা। সেই মামলায় আসামি মো. শাহজাহানকে (৫০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামির সম্পদ থেকে ভিকটিমের গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশুর ব্যয়ভার বহন করতে রাষ্ট্রকে আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. শাহজাহান চট্টগ্রাম মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার কাটাছড়া ইউনিয়নের মৃত শাহ আলমের ছেলে।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে ভয় দেখিয়ে ১৩ বছরের এক শিশুকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন শাহজাহান। পরে এ ঘটনায় শিশুর মা জোরারগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে একই বছরের ১৫ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশি মামলা করেন শিশুর মা। এ মামলায় জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন আদালত।

আরও পড়ুন: সাতকানিয়ায় ধর্ষণ করে ধর্ষক ইউসুফ লুকিয়ে ছিল ফেনীতে

এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষিত শিশুর গর্ভে সন্তান আসে। কিন্তু এ সন্তানকে অস্বীকার করেন মামলার একমাত্র আসামি শাহজাহান। পুলিশও ধর্ষণের ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা না পাওয়ার তদন্ত প্রতিবেদন দেন আদালতে। এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেন ভুক্তভোগী।

এরপর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৯(১)/১৩ ধারায় আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ভুক্তভোগীর আবেদনে ডিএনএ পরীক্ষায় ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণ হয়। ডিএনএ প্রতিবেদনে শিশুর জন্মদাতা বাবা হিসেবে আসামি শাহজাহানের নাম উল্লেখ করা হয়। ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইবুনাল। এসময় রাষ্ট্রপক্ষ ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন ট্রাইব্যুনালে।

এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল পিপি খন্দকার আরিফুল আলম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ডিএনএ পরীক্ষায় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মো. শাহজাহানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন আদালত। ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর সকল ব্যয়ভার আসামির সম্পত্তি থেকে বহন করবে রাষ্ট্র। জন্মগ্রহণ করা শিশু শাহজাহানের সন্তান পরিচয়ে সমাজে পরিচিত হবেন।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!