চট্টগ্রাম মেডিকেলে নবজাতক চুরির নেপথ্যে মা—মেয়ে

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া নবজাতক ফেনীর পরশুরাম থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন— নাসিমা আক্তার (২৩) ও খারু আক্তার (৪২)। তাদের বাড়ি ফেনী তাঁরা সম্পর্কে মা-মেয়ে।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে নবজাতক চুরির ঘটনা ও উদ্ধারের বিস্তারিত তুলে ধরেন পাঁচলাইশ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফ হোসেন।

এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেলের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের এনআইসিইউ থেকে ৪ দিনের নবজাতকটি চুরি হয়।

পাঁচলাইশ থানা সূত্রে জানা গেছে, ১৫ ডিসেম্বর নগরের পাঁচলাইশ মডেল থানার ও আর নিজাম রোডের রয়েল হাসপাতালে লোহাগাড়ার বাসিন্দা মো. নোমানের স্ত্রী আসমা উল হোসনা (১৯) সন্ধ্যা ৬টায় সিজারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। শারীরিক অবস্থা ভালো না হওয়ার ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রয়েল হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।

১৭ ডিসেম্বর নবজাতকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রয়েল হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার স্ত্রী ও নবজাতক সন্তানকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান৷

আরও পড়ুন : ‘নবজাতক চুরি’ চট্টগ্রাম মেডিকেলে, নানিসহ ৩ চোরকে ধরল পুলিশ

মেডিকেলের ষষ্ঠ তলার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে স্ত্রীকে এবং নবজাতক কন্যা সন্তানকে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শিশুর কাছে ছিল না কোনো অভিভাবক।

১৯ ডিসেম্বর দুপুর ২টায় ওই নারীর বোন এনআইসিইউতে গেলে দেখেন নবজাতক বেডে নেই।

এ প্রসঙ্গে সহকারী পুলিশ কমিশনার (পাঁচলাইশ জোন) আরিফ হোসেন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ভুক্তভোগীর স্বজন ঘটনার পর ওয়ার্ডের কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স ও সিকিউরিটিকে বিষয়টি জানান। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তাদের নবজাতক কন্যা সন্তানকে খোঁজাখুঁজি করে পাওয়া যায়নি৷

তিনি বলেন, বাদি ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নবজাতক চুরির ঘটনা জানতে পেরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং হাসপাতালের সিসি ফুটেজসহ অন্যান্য ডকুমেন্টস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। পরে পাঁচলাইশ থানার একটি দল ফেনী জেলার পরশুরাম থানা এলাকা থেকে চুরি হওয়া শিশু উদ্ধার করে। এসময় ঘটনায় জড়িত মা-মেয়েকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, মা-মেয়ে হাসপাতালে তাদের অসুস্থ নবজাতককে রেখে আসমাউল ও নোমান দম্পতির নবজাতকটি নিয়ে পালিয়ে যান। তাদের শিশুও এনআইসিইউতে ভর্তি ছিল।

যোগাযোগ করা হলে পাঁচলাইশ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সঠিক কাগজপত্র দেখিয়ে নবজাতকদের হাসপাতাল থেকে নিয়ে যান অভিভাবকেরা। কিন্তু এরপরও হিসাব করে ওয়ার্ডে একটি নবজাতক অতিরিক্ত পাওয়া যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে এই নবজাতক কারা এনেছেন, তা শনাক্ত করা গেলেও হাসপাতালে তাদের পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাদের কথা অসংলগ্ন মনে হয়। ফোনের অবস্থান নির্ণয় করে রাতে ফেনী থেকে নবজাতকটি উদ্ধার ও মা-মেয়েকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নবজাতককে উদ্ধারের পর অসুস্থ থাকায় পুনরায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।

এআইটি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!