পরিবহন মালিক—শ্রমিকের ডাকা কর্মবিরতিতে চট্টগ্রাম বন্দরে অচলাবস্থা

১৫ দফা দাবিতে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক—শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা কর্মবিরতিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। ফলে কনটেইনার পরিবহনের প্রাইম মুভার (ট্রেইলার), কাভার্ডভ্যান ও ট্রাকসহ পণ্যবাহী কোনো গাড়ি বন্দরের ভেতর প্রবেশ করতে পারছে না। এতে আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, শিপিং এজেন্টসহ বন্দর ব্যবহারকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। এ সময় সংগঠনের নেতাকর্মীরা বন্দরে ঢুকতে দেয়নি পণ্যবাহী কোনো গাড়ি। এনসিটি, সিসিটি ও জিসিবির জেটি এবং ইয়ার্ডেও লোড-আনলোডে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব সেজে ‘লাখপতি’, মামলার জালে প্রতারক

সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের শতাধিক নেতাকর্মী ও শ্রমিকেরা কোনো পণ্যবাহী গাড়ি বন্দরের ভেতর ঢুকতে দিচ্ছে না। পণ্যবাহী গাড়ি দেখলেই আটকে দিচ্ছে। এতে পণ্যবাহী গাড়ি ফেরত যেতে বাধ্য হয়। এ সময় পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে ডিপো ও সড়কের আশপাশে অলসভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। শ্রমিকেরা তাদের ১৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে স্লোগানও দিতে থাকে।

আন্দোলনকারীরা জানান, তারা দাবি আদায়ে বিভিন্ন মন্ত্রী ও প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে যোগোযোগ করেছিলেন। এছাড়া লাইসেন্সের ব্যাপরে ১৯ সেপ্টেম্বর বিআরটিএ চেয়ারম্যানের সঙ্গেও দেখা করেন। তবে কোথাও দাবি আদায়ের আশ্বাস না পেয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে কর্মবিরতিতে নামেন।

আরও পড়ুন: বিদেশ যেতে বাধা—প্রবাসীদের কান্না, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বসেনি র‍্যাপিড পিসিআর

১৫ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের অগ্রিম আয়কর নেওয়া বন্ধ ও এ পর্যন্ত নেওয়া অগ্রিম আয়কর ফেরত দেওয়া, ১০ বছর ধরে বন্ধ থাকা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চালকদের লাইসেন্স দেওয়া ও অবিলম্বে লাইসেন্স দেওয়া চালু করা, পুনরায় লাইসেন্স নেওয়ার ক্ষেত্রে ফিল্ড টেস্টে পদ্ধতি বাতিল করা, পণ্য পরিবহণ খাতে সরকার নিবন্ধিত শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ‘কল্যাণ তহবিল’ ও চাঁদা আদায়ে বিধিনিষেধ আরোপ বন্ধ করা, সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের জন্য রেশনিং সুবিধা চালু করা, চট্টগ্রামের ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মনোনিত সকল প্রতিনিধি, চালক ও সহকারীকে বন্দরে প্রবেশে হয়রানি বন্ধে বাৎসরিক নবায়নযোগ্য বাযোমেট্রিক কার্ড চালু করা, যত্রতত্র নয় নির্দিষ্টস্থানে গাড়ির কাগজপত্র চেক করা, পুলিশের ঘুষ বাণিজ্যসহ সকল প্রকার শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক ওবাইদুর রহমান বলেন, আমরা আমাদের দাবি আদায়ে মন্ত্রী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিআরটিএ চেয়াম্যানের সঙ্গে দেখা করেও কোনো সমাধান পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা কর্মবিরতিতে নেমেছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

মাহবুব/এসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!