চট্টগ্রামে শিশু অপহরণ—২০ হাজার টাকায় বেচা, পুলিশ উদ্ধার করল চাঁদপুর থেকেই

আসমা বেগমের কোনো সন্তান নেই। লালন পালনের জন্য বোন হালিমাকে একটি শিশু সন্তানের কথা বলে রেখেছিলেন। সন্তান এনে দিতে পারলে টাকাও দেবেন বলেছিলেন।

এরপর থেকে টাকার লোভ পেয়ে বসে হালিমার। খুঁজতে থাকেন শিশু সন্তান অপহরণের সুযোগ।

এভাবে একসময় চোখ পড়ে প্রতিবেশী জাহানারা বেগমের ১০ মাসের শিশুসন্তান আকাইদের ওপর। জাহানারা ছেলেকে নিয়ে পাহাড়তলী থানার শাপলা আবাসিক এলাকার ইদ্রিস কলোনিতে ভাড়া বাসায় থাকেন।

আরও পড়ুন: অপহরণ না আত্মগোপন—২৪ দিনেও খোঁজ মেলেনি ছাত্রীর

১৪ সেপ্টেম্বর জাহানারা ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকলে হালিমা বেগম কৌশলে আকাইদকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে বোন আসমার কাছে বিক্রি করে ২০ হাজার টাকায়। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করে আরো ৬ জন।

সন্তানকে খুঁজে না পেয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর পাহাড়তলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন জাহানারা।

অভিযোগ পেয়ে থানা পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে শাপলা আবাসিক এলাকা থেকে হালিমাসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা হলো- কিশোরেগঞ্জ জেলার নিকলী থানার জারিতলা ইউনিয়নের সাজনপুর মানিক চেয়ারম্যান বাড়ির আবদুল হাশেমের ছেলে মো. ফরহাদ (৪০) একই এলাকার আবু মিয়ার ছেলে মো. দুলাল (৩০), মো. সবুজ (২৫), বেলাল হোসেনের স্ত্রী হালিমা বেগম (২৬), সিদ্দিকুর রহমানের স্ত্রী আসমা বেগম (৩৫) এবং খলিলু রহমানের ছেলে বেলাল হোসেন (৩৫)।

এদিকে জাহানারা বেগমের বাড়িও কিশোরগঞ্জ। সেই হিসেবে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা তাকে আগে থেকে চিনতো।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আশপাশের লোকজনের তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পাহাড়তলী শাপলা আবাসিক এলাকা থেকে ফরহাদ, দুলাল সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মতে, চাঁদপুর জেলার মতলব এলাকা থেকে আসমা বেগেম ও তার স্বামী বেলালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে শিশু আকাইদকে উদ্ধার করে মা জাহানারার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: দিনদুপুরেই অপহরণ—মুক্তিপণ চেয়ে পুলিশের কব্জায় ২ সন্ত্রাসী

আকাইদের মা জাহানারা বেগম বলেন, আমি সন্তান হারিয়ে পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। এত অল্প সময়ে আমার সন্তানকে কোলে ফিরে পাব কল্পনাও করিনি। এজন্য পাহাড়তলী থানা পুলিশকে অশেষ ধন্যবাদ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১০ মাসের শিশু অপহরণের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিই। আশপাশের লোকজন ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে প্রাথমিকভাবে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করি। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মতে, চাঁদপুর মতলব এলাকা থেকে শিশু আকাইদকে উদ্ধারসহ আরো ২ জনকে গ্রেপ্তার করি। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সিএম/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!