চট্টগ্রামে রাতেও রক্তিম আকাশ

একের পর এক আকাশে উড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন থিমে বানানো ফানুস। এর মধ্যে বিচিত্র আকারের কিছু ফানুস নজর কাড়ছিল উপস্থিত দর্শনার্থীদের। আবার কিছু ফানুসে ছিল ধর্মীয় চিহ্ন কিংবা শান্তির বাণী আঁকা। এসব ফানুসে রক্তিম হয়ে উঠে রাতের আকাশ।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে নগরের নন্দনকানন এলাকা পরিণত হয় ফানুসের মেলায়। ফানুস আর আতশবাজির ঝলকানিতে পালন করা হয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা।

আজ সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় উৎসবের মূল পর্ব৷ ছোট থেকে বড় সবাই বিভিন্ন থিমে বানানো ফানুস উড়িয়ে আনন্দে মেতে উঠে। সম্মিলিত প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে বিভিন্ন সংগঠন মিলিত হয় এ উৎসবে। কেউ ফানুস উড়ানোর ভিডিও করছেন, আবার কেউ তুলছেন নিজের ছবি। তবে ফানুস উড়ানো দেখতে বিকেল থেকে মন্দির প্রাঙ্গণে ভিড় জমতে থাকে নানা বয়সী মানুষের।

এসময় সম্যক, অগ্রদূত, মৈত্রী সংঘ, সিবলী সংসদসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনের সদস্যরা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, নেচে-গেয়ে ফানুস উড়িয়ে উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে উঠেন।

অগ্রদূত সংগঠনের প্রত্যয় বড়ুয়া বলেন, আত্মশুদ্ধি অর্জনের মধ্যদিয়ে অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণের আয়োজন হলো প্রবারণা। আমরা আজ গৌতম বুদ্ধকে স্মরণ করছি।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামের আকাশে—বাতাসে খুশির জোয়ার

ফানুস দেখতে আসা নিলা চাকমা বলেন, প্রতিবছর এই সময়টার জন্য অপেক্ষায় থাকি। আজকের এই দিনে সবাই একসঙ্গে উৎসবে মেতে ওঠার আনন্দ-অনুভূতি অন্যরকম।

জানা যায়, মহামতি গৌতম বুদ্ধ নির্বাণ লাভের পর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা উদযাপন করেন। সেই থেকে বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরা বর্ষাবাস শেষে দিনটি উদযাপন করে আসছেন। এটি আশ্বিনী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। ফানুস ওড়ানোর পাশাপাশি প্রবারণা পূর্ণিমায় বুদ্ধপূজা, সংঘদান, পিণ্ডদান, অষ্টপরিষ্কার দান, পঞ্চশীল প্রার্থনা, শীল গ্রহণ, প্রদীপপূজার মতো নানা আচার পালন করা হয়।

এর আগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এএম রেজাউল করিম চৌধুরী।

প্রধান বক্তা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। উদ্বোধক ছিলেন সাবেক সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান।

এদিকে বৌদ্ধ পূর্ণিমাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় নন্দনকানন এলাকায়।

এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে নন্দনকানন এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। উৎসব যেন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা যায় সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!