চট্টগ্রামে যুবলীগ কেন্দ্রীয় নেতাকে ‘শক্তি’ দেখাতে ৩ গ্রুপের মারামারি, রক্তাক্ত ৫

চট্টগ্রামে যুবলীগের তিন গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। দফায় দফায় সংঘর্ষে পাঁচজন রক্তাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে দায়িত্বশীলদের কেউ বিষয়টি স্বীকার করেননি।

বুধবার (২ নভেম্বর) সকালে শাহ আমানত বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের নিচে এ ঘটনা ঘটে।

বুধবার (২ নভেম্বর) ঢাকায় কেন্দ্রীয় যুব মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সঙ্গে সমন্বয় সভার আয়োজন করে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ ফজলে নাঈম। প্রেস ক্লাবের নিচে তাঁকে বরণ করার পর তিনি লিফটে উঠেন। এর পর নিচতলায় মারামারি শুরু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শাহ আমানত বিমানবন্দরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচএম ফজলে রাব্বী সুজন গ্রুপের সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন গ্রুপের মারামারি হয়। অন্যদিকে প্রেস ক্লাবের নিচে সুজন গ্রুপের সঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি গ্রুপের মারামারির ঘটনা ঘটে।

বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় সরেজমিন দেখা গেছে, প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ ফজলে নাঈমসহ চট্টগ্রামের যুবলীগ নেতারা লিফটে সভাস্থলে উঠে যান। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচএম ফজলে রাব্বী সুজনসহ কালো পোশাক পড়া তাঁর গ্রুপের সদস্যরা প্রবেশ করেন। এসময় কর্মীদের সঙ্গে কালো পোশাকধারীদের ধাক্কা লাগায় ঘটনার সূত্রপাত হয়।

এদিকে প্রেস ক্লাবের নিচে থাকা একটি চিঠির বক্স ভেঙে ফেলা হয়েছে। নিচে রাখা অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ নিয়ে তারা মারামারি শুরু করে। এসময় ফজলে রাব্বি সুজনের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দিতেও দেখা যায়। ঘটনার সময় অনেক যুবলীগ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা দুগ্রুপকে সরিয়ে দেয়।

মারামারির সময় আশপাশে থাকা কর্মীরা বলেন, এর আগে এয়ারপোর্টেও সুজনের গ্রুপ মারামারি করেছে অন্য একটি গ্রুপের সঙ্গে। তারা এখানে এসেও একই ঘটনা ঘটিয়ে যুবলীগের সম্মান নষ্ট করছে।

যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি অস্বীকার করেন ফজলে রাব্বি সুজন। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, চট্টগ্রামের যুবলীগ নেতারা প্রধান অতিথিকে অভিনন্দন জানানোর সময় একটু ধাক্কাধাক্কি হয়। প্রেস ক্লাবের নিচে লিফটের জায়গা ছোট হওয়ার কারণে ছোটদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। আমি নিজে উপস্থিত থেকে বিষয়টি মীমাংসা করে সবাইকে সরিয়ে দিয়েছি।

একই বিষয়ে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি বলেন, চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টে নাঈম ভাইয়ের গাড়ির সামনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেনের গ্রুপের সঙ্গে সুজন গ্রুপের মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার রেশ ধরে প্রেস ক্লাবের নিচে আবারও মারামারি হয়। কিন্তু ঘটনার সময় সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম না। এখানে আমার গ্রুপের নাম আসছে কেন? আমার গ্রুপের ছেলেরা যদি ঘটনা করে থাকে তাহলে আমি দায় নিব। তবে আমাকে তাদের নাম জানাতে হবে। এভাবে উলুবনে একটি কথা ছেড়ে দিয়ে আমাকে বিনা বিচারে ফাঁসি দিয়ে দিবে এমন তো হয় না।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন বলেন, যুবলীগের অনুষ্ঠানে আমি যাব, প্রশ্নই আসে না। এ ঘটনাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করতে এমন তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!