চট্টগ্রামে আকবরশাহে ‘বড় চক্র’ গিলে খাচ্ছে ২৫০০ বাসার বিদ্যুৎ বিল

প্রতি ঘর থেকে মাসে আদায় ৬শ থেকে ৯শ টাকা

নগরের আকবরশাহ এলাকার প্রায় আড়াই হাজার বসতঘরে অবৈধ বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে প্রকাশ্যই চুরি করছে বিদ্যুৎ। এতে করে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে ফায়দা লুটে রমরমা বাণিজ্য করছে সেই চক্র। পিছিয়ে নেই বিদ্যুৎ বিভাগের মাঠকর্মী থেকে শুরু করে ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারাও।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, আকবরশাহ থানাধীন নিউ শহীদ লেইন বিহারি কলোনি ও শহীদ লেইন এলাকায় প্রায় দুই হাজার বসতি। তবে নেই সরকারি বিদ্যুৎ। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওই চক্রটি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষাধিক টাকা।

রাকিব, ঐশি ইলেকট্রিক ও বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহ নামে একটি সমিতি রয়েছে। এই নামে রয়েছে মাসিক ভাড়ার বইও। প্রতিটি বাসায় লাইট ও পাখা ব্যবহারের ওপর বিল দিতে হয় সদস্যদের। একটি লাইট ও পাখা চললে দিতে হয় ছয়শ’ টাকা। আর বাড়তি লাইট পাখা জ্বালালে প্রতি প্রতি মাসে গুনতে হয় নয়শ’ টাকা। প্রায় আড়াই হাজার ঘর প্রতি ছয়শ’ টাকা করে আদায় করলে মাসিক চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় দেড় লাখ টাকা। এই চাঁদার ভাগ পায় বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষসহ এলাকার নেতারা।

অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যুৎ চুরিতে সরাসরি সহায়তা করছেন নগর বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। এর বিনিময়ে তাঁরা প্রতি মাসে নিচ্ছেন মাসোয়ারা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর বিদ্যুৎ বিভাগের খুলশী জোনের সহকারী প্রকৌশলী শংকর দাশ বলেন, এমন অভিযোগ সত্য নয়। যারা বিদ্যুৎ চুরি করে তারা নিজেরা বাঁচার জন্য আমার আমাদের নাম বিক্রি করছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিহারি কলোনির এক বাসিন্দা বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে বিদ্যুৎ চুরি করে আসছে একটি সিন্ডিকেট। প্রতি মাসে জমা বইয়ের মাধ্যমে তাঁরা টাকা উত্তোলন করে থাকে। কোনো মাসে টাকা না দিতে পারলেই শুরু হয় গুন্ডামি।

এদিকে সমিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন আনোয়ার ও ও ছোটন নামে দুই যুবক। আর বিদ্যুৎ চুরিতে কাজ করছেন আহম্মেদ, আনোয়ার, ওয়াশিম, শাহ কামাল ও চোরা কাশেম।

চোরাই বিদ্যুৎ সরবরাহের নিয়ন্ত্রক আনোয়ারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমরা চোরা বিদ্যুৎ সরবরাহ করছি আপনার কাছে কি প্রমাণ আছে? প্রতিবেদকের হাতে বৈদ্যুতিৎ খুঁটি থেকে বিদ্যুৎ চুরির ভিডিও আছে এমন উত্তরে তিনি প্রতিবেদককে তার সাথে দেখা করার অনুরোধ জানান।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম নগরের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বিদ্যুৎ চুরি শাস্তি যোগ্য অপরাধ। দুটি কলোনির প্রায় আড়াই হাজার পরিবার চোরা বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম। আমি তদন্ত করে চোরাই বিদ্যুৎ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!