উচ্ছেদ করা হালদাপাড়ের ইটভাটাগুলো ফের চালু, জানে না প্রশাসন

হালদা নদী দূষণমুক্ত রাখতে উচ্ছেদ করা হয়েছিল হালদাপাড়ের দুটি ইটভাটা। তবে সেই দুটি ইটভাটা ফের চালু হয়েছে। বর্তমানে ইটভাটাগুলো হালদাপারের চরের মাটি ব্যবহার করে কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করছে ইট। নদী সুরক্ষা আইনে হালদাপাড়ের একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ইটভাটা গড়ে তোলা নিষিদ্ধ হলেও ইটভাটা মালিকরা তা মানছেন না। ফলে হালদার মা মাছ, ডলফিনসহ জীববৈচিত্র্যে হুমকির মুখে পড়েছে।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, হালদাপারের চালু করা এ আলী ইটভাটার ইট উৎপাদন অব্যাহত আছে।

এ বিষয়ে ইটভাটার মালিক ফরহাদ চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থেকে অনুমতি নিয়ে ইটভাটা চালু করেছি ।

জানা যায়, রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোকামিপাড়া গ্রামে হালদার পাড় ঘেঁষে গড়ে তোলা এ আলী ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর। কিন্তু সেই ইটভাটা ফের চালু হয়েছে। সেখানে ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে হালদা নদীর জেগে উঠা ও ছায়ার চর থেকে কাটা মাটি। চর থেকে মাটি কেটে যান্ত্রিক নৌযান ভর্তি করে আনা হচ্ছে ইটভাটায়।

এছাড়া হালদাপারের একই উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের আবুরখীল গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে হালদার পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠা শান্তি ব্রিকসে ইট তৈরি বন্ধ রয়েছে। তবে উরকিরচর ইউনিয়নের সার্কদা গ্রামে হালদার তীর ঘেঁষে আজমীর ব্রিকস ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করছে হালদা নদীর মাটি।

যোগাযোগ করা হলে হালদা গবেষক অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, নদী সুরক্ষা আইনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে হালদাপারের একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে অর্থাৎ পাড়ের খুব কাছাকাছি ইটভাটা করা যাবে না। তিনটি ইটভাটা হালদাপারের একেবারের কাছাকাছি ও নদী ভরাট করে করা হয়েছে। এসব ইটভাটা বন্ধ করা উচিত।

এ বিষয়ে নোয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া বলেন, এ আলী নামের ইটভাটাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোনো ধরনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগজ্যাই মারমা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, গুঁড়িয়ে দেওয়া ইটভাটা চালুর বিষয়ে আমি অবগত নই। যদি চালু হয়ে থাকে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

ইউএনও আরও বলেন, হালদা নদী এখন বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ এবং দেশের জাতীয় সম্পদ। এটি রক্ষা করা প্রশাসনসহ সকলের দায়িত্ব। এই নদীর পাড়ে দখল–দূষণ করে ইটভাটা চালানো যাবে না।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!