ইসকন মন্দিরের রাস্তা নিয়ে বিএনপি নেতার মাস্তানি, দখলে মরিয়া

৫০০ বছরের পুরনো এক রাস্তা। এই রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন যাওয়া-আসা করে অসংখ্য মানুষ। আবার সনাতন ধর্মবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী পুন্ডরীক ধামেও যেতে হয় এই রাস্তা দিয়ে। প্রাচীন সেই রাস্তাটিই দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় এক চক্র। যার নেতৃত্বে রয়েছে প্রভাবশালী এক বিএনপি নেতা।

এদিকে ঐতিহ্যবাহী পুন্ডরীক ধামের যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়ার অপচেষ্টার খবরে ক্ষোভে ফুঁসছে সনাতনী সমাজ। এ অবস্থায় প্রাচীন এই রাস্তাটি মুক্ত রেখে সাধারণ মানুষসহ মন্দিরের ভক্তদের চলচল নির্বিঘ্ন করতে এগিয়ে এসেছেন হাটহাজারীর পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ। এজন্য তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। মন্দিরের পক্ষে ১৪৭ ধারায় আদালতে আবেদন করেছেন নিষেধাজ্ঞা জারির।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালত আবেদনটি গ্রহণ করেছেন। আগামী ২ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন। একইসঙ্গে ওই সময় পর্যন্ত এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার বিবাদীরা হলেন- হাটহাজারী মীরের খীল এলাকার মীর বাড়ির মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও তাঁর বাবা মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনসহ অজ্ঞাত ১০ থেকে ১৫ জন।

এ বিষয়ে বাদীর আইনজীবী শুভাশীষ শর্মা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধের জেরে ১৪৭ ধারায় নিষেধাজ্ঞার আবেদন করলে আদালত সেটি গ্রহণ করে আগামী ২ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। তবে ওই সময়ের মধ্যে সেখানে স্থিতাবস্থা জারি করে নালিশী জমির দখল ও মালিকানা বিষয়ে স্কেচম্যাপসহ প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য হাটহাজারীর এসি ল্যান্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাটহাজারী থানার ওসিকে আদালত।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, শত বছর ধরে হাটহাজারীর শ্রীশ্রী জনার্দন বিগ্রহ মন্দিরের ব্যবহৃত রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে জবরদখলের পাঁয়তারা করছেন বিবাদীরা। গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে মন্দিরের একমাত্র চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়াল দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। এসময় পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ বাধা দিলে বিবাদীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে শারীরিকভাবে আঘাতের চেষ্টা করেন। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে বিবাদীরা পালিয়ে যান।

এদিকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিবাদীরা হুমকি দিয়ে বলেন, এ রাস্তা আর ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। যেকোনো সময় আবার দখল করতে আসব। ওই সময় কেউ বাধা দিলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হবে।

যোগাযোগ করা হলে পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মন্দির প্রতিষ্ঠার অনেক আগেই এটি স্থানীয়দের চলাচলের পথ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ৫০০ বছরের পুরনো চলাচলের সেই পথটিই দখলের চেষ্টা চলছে। অথচ বিএস এবং আরএস সীটে এটি রাস্তা হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!