ইসকনের মামলায় জামিন পেলেন অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র লালা

ইসকনের মামলায় জামিন পেয়েছেন অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র লালা (৮৩)।

বুধবার (৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবিরের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করা হয়।

ট্রাইব্যুনালের পিপি মেজবাহ উদ্দিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র লালা এজাহারভুক্ত আসামি নন। তবে চার্জশিটে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে পুলিশের নগর গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। আজ শুনানির দিন ধার্য থাকায় তিনি জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ জুন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রবর্তক সংঘের নেতারা ইসকনকে ‘জঙ্গি’ সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে। পরে এ ঘটনায় একই বছরের ১৪ জুলাই জুয়েল শীল প্রকাশ জগদার্তিহা দাস বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করেন।

মামলায় প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী, সহসভাপতি রণজিৎ কুমার দে এবং অজ্ঞাত ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুল জানান, এ মামলার তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা বিভাগকে দেওয়া হয়। এরপর ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা। মামলায় দুজনের নাম উল্লেখ থাকলেও তদন্তে উঠে আসে অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র লালার নাম।

এর আগে বেআইনিভাবে প্রবর্তক সংঘের ভূমি আত্মসাৎ, মন্দিরের দানের অর্থ লোপাটসহ বিভিন্ন ‘অনৈতিক কর্মকাণ্ডে’র কারণে ইসকনের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় প্রবর্তক সংঘ।

এরপর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হল মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী। পরে উভয়পক্ষের মৌখিক আবেদনে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত গত ২ এপ্রিল ঢাকায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আহ্বান করেন। কিন্তু বৈঠকে ইসকনের কেউ উপস্থিত হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তুলে প্রবর্তক সংঘের নেতারা বলেন, মে মাসে ইসকন নবনির্মিত প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের উদ্বোধন করেছে প্রবর্তক সংঘের অংশগ্রহণ ছাড়াই। সংঘের কোনো সদস্য বাধার কারণে মন্দিরে যেতে পারে না। প্রবর্তক সংঘ থেকে মন্দিরে ওঠার জন্য ভেতরের সিঁড়িটি ইসকন নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। ইসকনের সঙ্গে করা চুক্তিবহির্ভূত জায়গায় তারা অনুপ্রবেশ করেছে।

ইসকন নাম ব্যবহার করে প্রবর্তক সংঘের অনুমতি ছাড়া বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ওয়াসা কর্তৃপক্ষের কাছে মিথ্যা ও জাল দলিলের মাধ্যমে সংযোগ নেওয়া হয়েছে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সব প্রতিষ্ঠানে আবেদনসহ দুদকে গত ১৬ জুন অভিযোগ করা হয়েছে। এর আগে গত ৮ জুন ইসকনের কয়েকজনকে আসামি করে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা করা হয়।

প্রবর্তক সংঘের গাছ কেটে বিক্রি, ইচ্ছেমতো মন্দির প্রাঙ্গণের আকৃতি এবং প্রকৃতি পরিবর্তন, পেশিশক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রবর্তকের ভূমি দখলের অপচেষ্টায় বহিরাগতদের মন্দিরে জমায়েত করে অপ্রীতিকর ঘটনা সাজিয়ে দায়ভার চাপানোর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এই আশঙ্কায় প্রবর্তক সংঘের পক্ষ থেকে ইসকনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুন থানায় জিডি করা হয় এবং প্রবর্তকের ভূমি রক্ষা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তায় সশস্ত্র আনসার নিয়োগের আবেদন করা হয়।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!