মাদ্রাসার দখল নিয়ে আনোয়ারা রণক্ষেত্র, রক্তাক্ত ২৪—বসতঘর ভাঙচুর

আনোয়ারায় মদিনাতুল উলুম ফোরকানিয়া মাদ্রাসা দখল নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২৪ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বারশত ইউনিয়নের দুধকুমড়া শরীফ মোল্লাহ দীঘিরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন- এনামুল হক (৩৪), মো. ইদ্রিস (৪২), আলমগীর (৩৫), আবদুল গফুর (৫৭), হাসান (১৫), হিরা আকতার (৩৫), জোবায়ের (১৬), তাহেরা (৩০), রুমি (২৫), শাহ আলম (৫০), আবদুর রহমান (৬০), সোহেল (২৮), জাকির আহমেদ (৭০), জাফর ইকবাল (৪০), নুর হোসেন (২০), মো. ইকবাল (৪৮), মো. ইমন (২৫), ইউসুফ (২২), আবদুর রহিম (৫০), আলমগীর (৩৮), ফরহাদ (১৮), ইব্রাহিম (৪০), তাহের (৫০) ও রুবেল (২৮)।

আরও পড়ুন: কক্সবাজার রণক্ষেত্র—নির্বাচনি সংঘর্ষে যুবক খুন, পুলিশসহ রক্তাক্ত ১০

জানা যায়, স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুধকুমড়া এলাকায় মদিনাতুল উলুম ফোরকানিয়া মাদ্রাসা দখলকে কেন্দ্র করে কলিম উদ্দিন মতব্বর ও একই এলাকার মধ্যমপাড়া সোসাইটির মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এলাকার মেনাগাজির বাড়ির মৃত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে প্রবাসী জাফর ইকবাল মাদ্রাসার নাম পরিবর্তন করার জন্য একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন। এ ঘটনার সূত্র ধরে উভয়পক্ষ সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয় কয়েকজনের বসতঘর ভাঙচুর করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, মাদ্রাসাটি দীর্ঘদিন ধরে কলিম উদ্দিন মোল্লাহ্ বাড়ি জামে মসজিদের হাজী মোহাম্মদ সৈয়দ নুরের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছিল। প্রবাসী জাফর ইকবাল দেড় মাস আগে সৌদিয়া থেকে এসে মাদ্রাসাটি তাদের বলে দাবি করেন। মাদ্রাসার নাম পাল্টিয়ে ঝুলিয়ে দেন সাইনবোর্ড। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চলতে থাকে বাকযুদ্ধ।

এদিকে হামলার পর ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন আনোয়ারা-বাঁশখালী সার্কেল এসপি হুমায়ুন কবির, আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম দিদারুল ইসলাম সিকদার, বারশত ইউপি চেয়ারম্যান এমএ কাইয়ূম শাহ্, থানার ওসি তদন্ত ওমর সাঈদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

বারশত ইউপি চেয়ারম্যান এমএ কাইয়ুম শাহ্ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মাদ্রাসা দখল নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি প্রশাসন ও স্থানীয় সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সমাধানের চেষ্টা চলছে।

আর পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্প রণক্ষেত্র—নিহত ৭

যোগাযোগ করা হলে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম দিদারুল ইসলাম সিকদার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ ঘটনার জের ধরে আজ (মঙ্গলবার) উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইমরান/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!