আনোয়ারায় বাড়ছে লাম্পি স্কিন রোগ, আতঙ্কে খামারিরা

আনোয়ারায় গরুর মাঝে বাড়ছে লাম্পি স্কিন রোগ। ইতিমধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে দুশরও বেশি গরু। এর মধ্যে কয়েকটি গরু মারা গেছে।

এদিকে লাম্পি স্কিন রোগ বাড়তে থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন উপজেলার ক্ষুদ্র খামারিরা।

জানা যায়, লাম্পি স্কিন রোগ দেশে দু-তিন বছর আগ থেকে দেখা দেয়। এ রোগ সম্পর্কে অনেক খামারিই এখনো কিছু জানে না।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটিনারি হাসপাতালের এসএলও রতন কান্তি মহাজন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, প্রতিদিন ৬ থেকে ৭টি গরু উপজেলা হাসপাতালে এনে চিকিৎসা নিচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, লাম্পি স্কিন রোগ কম-বেশি সারাবছর ছিল। কিন্তু গত এক মাসে বেশি দেখা যাচ্ছে। এ রোগের ভ্যাকসিন থাকলেও খামারিরা পশুকে ভ্যাকসিন দিতে আগ্রহী হন না।

আরও পড়ুন : আনোয়ারায় ফল উৎসব

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত এক মাসে প্রায় ২০০টি গরু হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই সুস্থ হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ক্ষুদ্র খামারিরা জানায়, গরুর গায়ে প্রথমে গুটি-গুটি দেখা যায়। অথবা কোনো এক জায়গায় ফুলে যায়। তারপর শরীর থেকে পানি বের হয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এরপর দু-একদিনের মধ্যে গরুর শরীরজুড়ে গুটির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পেয়ে ক্ষত হয়। এরপর ক্ষত থেকে রক্ত ও পুঁজ বের হয়। এসময় গরুর শরীরে অতিরিক্ত তাপমাত্রা দেখা দেয় এবং গরু খাওয়া ছেড়ে দেয়। অনেক সময় গরুর বুকের নিচে পানি জমে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। ক্ষতস্থান থেকে মাংস খসে খসে পড়ে। সঠিক সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা কিংবা রোগের লক্ষণ জানা না থাকায় অনেক সময় গরু মারা যায়।

এদিকে গরুর অবস্থা বেগতিক দেখে উপজেলার খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি উপজেলা সদর ইউনিয়নের ভিলপুর গ্রামের খামারি হারুনের একটি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এছাড়া উপজেলার বটতলী, বরুমছড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে বেশ কয়েকটি গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান খামারিরা।

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সমরঞ্জন বড়ুয়া আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, সারাদেশেই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গবাদি পশু। আমরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা দিচ্ছি। এটি নিয়ে খামারিদের শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ এটি একটি ভাইরাস জাতীয় রোগ। রোগটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও এর প্রভাব তেমন একটা ক্ষতিকর না।

এদিকে হাইলধর গ্রামের খামারি নবী হোসেন জানান, হঠাৎ দেখি আমার গরুর বাছুরের পা ফুলে গেছে। এরপর ক্ষত হয়ে গেছে। চিকিৎসা নিয়েও এ রোগ সহজে ভালো হয় না। আমার পাঁচটি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

অপরদিকে বরুমছড়ার ইসমাইল বলেন, আমার ফিজিয়ান বাছুরের বয়স তিন মাস। হঠাৎ একদিন দেখি জ্বর হয়েছে। পুরো শরীর গুটিতে ছেয়ে গেছে। চিকিৎসা চললেও তিনদিন পর আমার গরুর বাছুর মারা যায়।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!