৪৫ সেকেন্ডেই মোটরসাইকেল হাওয়া করে দেয় ওরা

শুরুতে চোরচক্রের দুজন যায় স্পটে। এর মধ্যে একজন মোটরসাইকেল মালিকের গতিবিধি লক্ষ্য করেন, অন্যজন করেন পর্যবেক্ষণ। পরে সুযোগ বুঝে মাত্র ৪৫ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিটের মধ্যে লক ভেঙে মোটরসাইকেল নিয়ে হাওয়া হয়ে যান তারা। পরে সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে সরাসরি কক্সবাজারের রামুতে গিয়ে মোটরসাইকেল বিক্রি করে দেন তারা।

অবশেষে সেই চোরচক্রের সন্ধানে নামে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। শুরুতে তাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হয়। পরে চট্টগ্রাম মহানগর ও কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে চোরাই ৭টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- সাতকানিয়ার উত্তর ঢেমশার নুরুল আলমের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (৩৫), পূর্ব গাটিয়াডাঙ্গা এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে মো. সাজ্জাদ (২৭), কক্সবাজারের রামু থানার মধ্যম মেরংলোয়া এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে মো.জাহেদুল ইসলাম (২০) ও ঘোনারপাড়ার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো.ইউসুফ প্রকাশ মেকানিক ইউসুফ (২৪)।

এ নিয়ে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) উত্তর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোখলেসুর রহমান।

মোখলেসুর রহমান বলেন, মোটরসাইকেল চোরচক্রের সদস্যদের ধরতে নজরদারি বাড়ায় পুলিশ। মো. আনোয়ার হোসেন ও মো. সাজ্জাদ নামের দুচোরকে শনাক্ত করা হয়। নজরদারির একপর্যায়ে তাদের দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পূর্ব গেট দিয়ে প্রবেশ করতে দেখা যায়। এসময় তাদের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখে পুলিশ। আনোয়ার হোসেন সেখানে গিয়ে একটি মোটরসাইকেলে গিয়ে বসে। সাজ্জাদের ক্লিয়ারেন্স পাওয়া মাত্রই আনোয়ারের হাতে থাকা মাস্টার চাবি দিয়ে মোটরসাইকেলটির লক খুলে ইঞ্জিন চালু করা হয়। এসময় পুলিশ আনোয়ার হোসেন ও মো. সাজ্জাদকে আটক করে।

তিনি আরও বলেন, আনোয়ার হোসেন ও সাজ্জাদের দেওয়া তথ্যে রামু থানার দুর্গম পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে মো. ইউসুফ ওরফে মেকানিক ইউসুফকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ইউসুফের দেওয়া তথ্যে টেকনাফ থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোরাইমাল ক্রেতা-বিক্রেতা ও চোরচক্রের সদস্য জাহিদুল ইসলামকে (২০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় আনোয়ার ও সাজ্জাদের কাছ থেকে ১টি, ইউসুফের কাছ থেকে ৩টি ও জাহিদুলের কাছ থেকে ৩টিসহ মোট ৭টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

পাঁচলাইশ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আফতাব হোসেন বলেন, পাঁচলাইশ থানা এলাকার মোটরসাইকেল চুরি যাওয়ার সকল ঘটনাস্থল, রাস্তা, কর্ণফুলী টোল প্লাজাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ৬৫০টি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এসব ফুটেজ পর্যালোচনা করে মোটরসাইকেল চোর আনোয়ার হোসেন ও সাজ্জাদকে শনাক্ত করা হয়।

এস আই আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার ও সাজ্জাদ স্বীকার করে তারা মোটরসাইকেল চুরির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তারা দুজন স্পটে যায়। একজন মোটরসাইকেল মালিকের গতিবিধি লক্ষ্য করেন, অন্যজন পর্যবেক্ষণ। সুযোগ বুঝে ৪৫ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিটের মধ্যে মাস্টার চাবি দিয়ে লক ভেঙ্গে মোটরসাইকেল চালু করে নিয়ে যায়। পরে সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে সরাসরি কক্সবাজারের রামুতে মোটরসাইকেলটি ইউসুফের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

এনইউএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!