১০০০ কোটি টাকা মেরে সিঙ্গাপুরে ‘আরাম-আয়েশে’ চট্টগ্রামের সিলভিয়া গ্রুপের মালিক

বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কোটি কোটি ঋণ নিয়েছেন। আর ঋণের সেই টাকা বিদেশে পাচার করে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। হাজার কোটি টাকা মেরে দেওয়া সিলভিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মিলন এখন আয়েশ করছেন সিঙ্গাপুরে।

এদিকে জামানত ছাড়া সিলভিয়া গ্রুপকে ঋণ দিয়ে বিপাকে পড়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক। এই ব্যাংক থেকে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ১০ বছর ধরে পলাতক সিলভিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মিলন।

দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকা এই ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনগত ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিব, অর্থসচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে এ আদেশ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঋণখেলাপি মুজিবুর রহমান মিলন হালিশহর হাউজিং এস্টেট এল ব্লকের ৩ নম্বর রোড়ের ৩ নম্বর বাড়ির মরহুম মো. বজলুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে তিনি পালিয়ে সিঙ্গাপুরে আছেন।

এ বিষয়ে আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ২৪ কোটি ৭২ লাখ ৭৭ হাজার ২৫৮ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে মুজিবুর রহমান মিলনের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানার আবেদন করা হয়। আবেদন আমলে নিয়ে আদালত তাকে পাঁচ মাসের আটকাদেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, এ মামলায় ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু তিনি বিদেশে পালিয়ে থাকায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ওই ঋণের বিপরীতে ব্যাংকের কাছে সহায়ক কোনো জামানত নেই।

২০২১ সালে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটেে (বাংলাদেশে ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ) এক তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ঋণ জালিয়াতি করে আলোচিত চট্টগ্রামের সিলভিয়া গ্রুপ ২১৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এর মধ্যে জাহাজ আমদানি করে ১৭৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ও অন্যভাবে ৩৯ কোটি টাকা পাচার করে। পাচারের টাকায় সিলভিয়া গ্রুপের কর্ণধার মুজিবুর রহমান মিলন সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্যে গড়ে তুলেছেন ৬টি কোম্পানি। এসব কোম্পানির নামে সিঙ্গাপুরে ২টি, মাল্টায় ২টি, যুক্তরাজ্যে ১টি এবং ইতালিতে ১টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এছাড়া মিলনের নামে সিঙ্গাপুরের দুটি ব্যাংকে ৫টি ব্যক্তিগত হিসাবও আছে।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নানা প্রতিষ্ঠানের নামে এক হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়ে দেশত্যাগ করেছেন মুজিবুর রহমান মিলন। তাঁর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে অন্তত ১০টি ফৌজদারি মামলায় দণ্ড হয়েছে।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!