নগরের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ও ব্যয়বহুল শেভরন ল্যাবরেটরিতে চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সেবা প্রত্যাশীরা। নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতিতে প্রাণনাশের শঙ্কাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন এক ভুক্তভোগী।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি প্রাইভেট লিমিটেডের ৪০৪ নম্বর রুমে ঘটেছে বিশ্রী এক ঘটনা। এ ঘটনার শিকার হন চট্টগ্রাম সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যাপক নাছির উদ্দিন।
তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, গত রোববার ছেলে নাফিজ মুরসালিনের (২১) শারীরিক সমস্যার কারণে ডা. উজ্জ্বল বড়ুয়া অস্ত্রোপচার করেন। রাত দেড়টার পর অস্ত্রোপচারের পর কিছু জটিলতার কারণে তাকে শেভরন ল্যাবরেটরির ৪০৪ নম্বর কেবিনে ভর্তি রাখা হয়। চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আমি এবং আমার স্ত্রীকে বারবার রুমের বাইরে যেতে হচ্ছিল। যে কারণে লক করা দরজাও কিছু সময়ের জন্য খোলা রাখতে হয়। আমরা ভোরে ঘুমিয়ে পড়লে সকাল ৭টার দিকে নার্স এসে রোগী দেখে যাওয়ার সময় লক্ষ্য করলাম আমাদের তিনটি মোবাইল নেই। এসময় পুরো কেবিনে খুঁজেও মোবাইল ফোনগুলো পাইনি। পরে এ বিষয়ে জানাজানি হলে নার্স ও কর্তব্যরতরা বললেন, শেভরনে এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। এরপর বিষয়টি হাসপাতালের ফ্লোর ইনচার্জকে জানানো হলে, তিনি সকাল ১০টার দিকে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করবেন বলে জানান।
অধ্যাপক নাছির আরও বলেন, হাসপাতলের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা গেছে, রোগা একজন লোক কেবিনের সামনের লবি থেকে রুমে প্রবেশ করে। তারপর সব মোবাইল নিয়ে সে চলে যায়। ধূর্ত লোকটার বিষয়ে আশপাশের রুমে খোঁজ নিলেও কেউ তাকে চিনল না। তবে ফুটেজে যাকে দেখা গেছে তিনি ক্লিনিকের কেউ নন।
তিনি আরও বলেন, আমার, ছেলের ও স্ত্রীর ৩টি মোবাইল চুরি হয়ে গেল। মোবাইল বড় বিষয় নয়। এসময় আমার ছেলে অসুস্থ ছিল। যদি তার চিকিৎসাসেবার অন্য কোনো চিকিৎসা জটিলতা সৃষ্টি হতো? অথবা বর্তমানে পত্রপত্রিকায় সামান্য বিষয় নিয়ে যেসব খুনের ঘটনা পড়ছি, এমন কিছু ঘটত? ব্যয়বহুল একটি হাসপাতালের সিকিউরিটি ব্যবস্থা কেন এতো নাজুক হবে। কী কারণে তারা এতো টাকা নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন, যেখানে সেবা প্রত্যাশীদের নিরাপত্তাই দিতে পারছে না।
এ বিষয়ে জানতে শেভরন ল্যাবরেটরির পরিচালক (মেডিকেল) দেবাশীষ দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, অবশ্যই এটি একটি বেড অকারেন্স। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে সকল তথ্য নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। তাছাড়া আমাদের সিকিউরিটি ব্যবস্থাও জোরদার করেছি। সেদিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।’
এসময় বাইরের কেউ এসে যদি অন্য কোনো ক্ষতি করে যেত তখন কি এসব বলার সুযোগ আছে? প্রতিবেদনের এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান দেবাশীষ দত্ত। বারবার শুধু বলতে থাকেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের বিষয়ে।
আরএস/এসআর