মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা আয়োজন, যেমন ছিলেন প্রফেসর ড. মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী এমপি

সাবেক সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১২ সেপ্টেম্বর)। দেশে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, শিক্ষার প্রসার, সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘরকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, চট্টগ্রামের মুসলিম ইনস্টিটিউটের পুনর্নির্মাণে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।

২০২১ সালের এদিনে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, হাটহাজারী ও কক্সবাজারের বাসভবন এবং রাউজানের পারিবারিক কবরস্থান সংলগ্ন মসজিদে পবিত্র খতমে কুরআন ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী। শিক্ষক, চিত্রশিল্পী, নারী উদ্যোক্তা, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবকসহ বহু গুণের অধিকারী ছিলেন তিনি। সংরক্ষিত আসনের (ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার) এমপি ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন ড. মাসুদা।

আরও পড়ুন : প্রীতিলতার জন্মদিন—সুকান্তের মৃত্যুবার্ষিকীতে নাগরিক অধিকারের অনন্য আয়োজন

তিনিই একমাত্র নারী যিনি ব্যবসায়ী হিসেবে সর্বোচ্চ ভোটে এফবিসিসিআই পরিচালক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ভোটে একাধারে তিনবার সিনেট সদস্য, তিনবার সিন্ডিকেট সদস্য ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য হন। তিনি সার্ক চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট, ইউনেস্কো ক্লাব অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট, ওআইসি টাস্কফোর্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রেসিডিয়াম সদস্য, এসএমই ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি, একাধিকবার এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও বারভিডার নির্বাচন কমিশনার, বিসিক ও ইপিবির পরিচালক, নাসিবের সহসভাপতি, বাংলা ক্রাফ্টের সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট লিডার, আন্তর্জাতিক এশিয়ান আর্ট বিএনএলের সমন্বয়কারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ট্যুরিস্ট সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা ও মডারেটর, পরিকল্পনা কমিশন ও মাইডাসের কনসালট্যান্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং ক্লাবের উপদেষ্টা, বুয়েটের খণ্ডকালীন প্রফেসর এবং চারুকলা অনুষদ ও পিপলস্ ইউনিভার্সিটির ডিনের দায়িত্ব পালন করেন।

বর্ণাঢ্য জীবনের এই মহীয়সী নারী অর্জন করেন ৭৬টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ১৫ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরির কারণে ১৯৮৬ সালে ফিলিপাইনস থেকে সর্বোচ্চ পদকে ভূষিত হন। সমাজবিজ্ঞান, নারী উদ্যোক্তা, রাজনীতি, চিত্রকলার ওপর তার লেখা ৭৪টি বই রয়েছে।

ড. মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীর বাবা মরহুম আবুল মনসুর পাকিস্তানের শীর্ষ ব্যবসায়ী, মা মৌসুফা মনসুর বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থার সভানেত্রী ও চট্টগ্রাম বাওয়া স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। নানা খাঁন বাহাদুর আবুল মজিদ জিয়াউস সামস্ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান পার্লামেন্টের শিক্ষামন্ত্রী। দাদা খাঁন বাহাদুর টি আহম্মেদ উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম ডিপিআই ও ঢাকা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা।

পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের বিরোধীদলের নেতা একেএম ফজলুল কবির চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূ তিনি। তার স্বামী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. এবিএম ফজলে রশীদ চৌধুরী। তিনি ব্যারিস্টার সানজীদ রশীদ চৌধুরী এবং কন্যা সানজানার মা এবং রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর ভাবি।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের বিএফএ ছাত্রী থাকাকালীন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!