দুর্নীতি প্রতিরোধে ৬ দফা দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো–রাজনৈতিক সদিচ্ছা, আইনের কার্যকর প্রয়োগ, সরকারি কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার চর্চা, ভোটাধিকার প্রয়োগের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং অর্থপাচার রোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ।
দুর্নীতিবিরোধী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) আঞ্চলিক সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। শনিবার (২০ জানুয়ারি) নগরের একটি হোটেলে দুদিনব্যাপী এ আয়োজনের পর্দা নামে।
দুর্নীতিবিরোধী আঞ্চলিক সনাক সম্মেলনে চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে মুখ্য আলোচক ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন টিআইবির সাধারণ পর্ষদে সনাক প্রতিনিধি ও সনাক কুমিল্লার সদস্য বদরুল হুদা জেনু, সনাক চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি অ্যাড. আখতার কবির চৌধুরী এবং টিআইবির সিভিক এনগেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক ফারহানা ফেরদৌস।
সম্মেলনে সনাক চট্টগ্রাম মহানগর, পটিয়া, চকরিয়া, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং মুন্সীগঞ্জের প্রতিনিধি অংশ নেন। তাঁরা ‘দুর্নীতি, দারিদ্র্য, অবিচার ও দুুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন : নাগরিক ভাবনা’ এবং ‘টিআইবি’র চলমান কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ বিষয়ে মুক্ত আলোচনায় যুক্ত হন। এ সময় তাঁরা দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন সফল করতে করণীয় বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির কারণে আমাদের জাতীয় আয়ের একটি বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্নীতি না হলে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ হতে পারতো। বিশ্বে যে সকল দেশ অর্থ পাচারের শীর্ষে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। একশ্রেণির মানুষ অর্থপাচার করলেও তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয় না। যদি অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণ করা যেত তাহলে বছরে দেশের ১২ বিলিয়ন ডলার অর্থ রক্ষা করা হতো। নিম্ন আয়ের মানুষের কাঁধে বিত্তশালীদের ঋণের বোঝা, অথচ ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই ঘুষ না দিলে মানুষ যথাযথভাবে সেবা পায় না। সেবা প্রদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো কিছু রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
‘দুর্নীতি, দারিদ্র্য, অবিচার : নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তব্য রাখেন সনাক চট্টগ্রাম মহানগর সদস্য ইঞ্জি. সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া, সনাক চকরিয়ার সদস্য ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, সনাক চাঁদপুর সভাপতি ডা. পীযূষ কান্তি বড়ুয়া, সনাক পটিয়া সভাপতি অ্যাড. কবি শেখর নাথ পিন্টু, সনাক কুমিল্লার সদস্য মাসুক আলতাফ চৌধুরী, সনাক খাগড়াছড়ির সদস্য এমএ মর্তুজা পলাশ, সনাক লক্ষ্মীপুর সভাপতি প্রফেসর জেডএম ফারুকী, সনাক মুন্সীগঞ্জ সভাপতি মো. ফজলুর রহমান, সনাক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম, সনাক রাঙামাটির সদস্য অ্যাড. সুস্মিতা চাকমা, সনাক মুন্সিগঞ্জের সদস্য শাহনাজ বেগম, চট্টগ্রাম মহানগর সদস্য জেসমিন সুলতানা পারু ও সনাক কুমিল্লার সদস্য সেলিনা আক্তার।
দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা এবং চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেন সনাক চট্টগ্রাম মহানগর সদস্য সঞ্জয় বিশ্বাস, সনাক চকরিয়ার সহসভাপতি রনেন্দু বিকাশ দে, সনাক চাঁদপুর সদস্য কাজী শাহাদাত, সনাক পটিয়া সদস্য এসএমএকে জাহাঙ্গীর, সনাক কুমিল্লা সভাপতি রোকেয়া বেগম শেফালী, সনাক খাগড়াছড়ি সভাপতি শেফালীকা ত্রিপুরা, সনাক লক্ষ্মীপুর সদস্য প্রফেসর মো. রফিকুল আহসান, সনাক মুন্সীগঞ্জ সদস্য শুভংকর বিশ্বাস, সনাক ব্রাহ্মণবাড়িয়া সভাপতি আবদুন নূর এবং সনাক রাঙামাটি সদস্য নিরুপা দেওয়ান।
এছাড়া সম্মেলনের এ পর্বে সনাক চট্টগ্রাম মহানগরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত অ্যাকটিভ সিটিজেন্স গ্রুপের ৬ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
আলোকিত চট্টগ্রাম