চট্টগ্রামে হঠাৎ বেড়েছে ছোঁয়াচে ‘চোখ উঠা’—কী বললেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

কনজাংটিভাইটিস, সাধারণভাবে যাকে আমরা বলে ‘চোখ ওঠা’। চোখের পাতার নিচে ঝিল্লির মতো পাতলা পর্দা যা চোখের সাদা অংশকে ও চক্ষুপল্লবের ভেতরভাগকে ঢেকে রাখে। নগরে হঠাৎ করে বাড়ছে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা।

শিশু শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা বয়সের মানুষ সম্প্রতি এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ছোঁয়াচে রোগ হওয়ায় মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ছে রোগী থেকে সুস্থদের মাঝে। কোনো কোনো পরিবারে এক বা একাধিক ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন৷ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চিকিৎসা হেল্প সংক্রান্ত গ্রুপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এই রোগের প্রতিকার চেয়ে পোস্ট করছেন অনেকেই। হঠাৎ কেন ঘরে ঘরে চোখ ওঠা রোগ বাড়ছে তা নিয়ে জনমনে নানা জিজ্ঞাসা।

এদিকে নগরের চক্ষু হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে সরজমিনে দেখা যায়, চোখ ওঠা রোগীর ভিড়। চোখ ওঠা রোগীর মধ্যে বেশিরভাগই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী৷ সকালবেলা, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীকে চশমা পড়ে গন্তব্য যেতে দেখা যায়। কথা হয় এসব রোগে আক্রান্ত নগরের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।

আরও পড়ুন: লাইফবয়ের বিজ্ঞাপন ডাক্তারদের জন্য মানহানিকর, সরাতে নোটিশ

নগরের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ফাবিহা আলম বলেন, সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে আমার চোখ উঠেছে। এটা একটা অস্বস্তিকর অসুখ, ছোঁয়াচে হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে যাইনি।

খাস্তগীর স্কুলের রীনা আক্তার বলেন, আমিসহ বেশ কয়েকজন সহপাঠী এ রোগে আক্রান্ত হয়েছি। হঠাৎ এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে৷

নগরের ডিসি রোডে চশমা পড়ে থাকা মুদি দোকানি জাহেদ বলেন, চোখে জ্বালাপোড়া হচ্ছে। কিন্তু ব্যবসা করেই বেঁচে থাকতে হবে। তাই ইচ্ছে থাকলেও বাসায় থাকতে পারছি না।

এদিকে ফেসবুক পোস্টে সাহায্য চেয়ে মনিষা তুর্জা লিখেন, আমার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য চোখ ওঠা রোগে কষ্ট পাচ্ছি৷ হঠাৎ এই রোগ হওয়ায় বেশ চিন্তায় আছি, কী করলে দ্রুত সুস্থ হবো এবং কেন এরকম রোগ হচ্ছে- সে বিষয়ে জানতে চাচ্ছি৷

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চক্ষু বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. সৈয়দ মু. আসিফুর রহমান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মূলত গরম আবহাওয়া এবং হঠাৎ ঝিরি বৃষ্টির কারণে চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস রোগটি বেশি দেখা যাচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই৷ কিছু পরামর্শ মেনে চললে এ রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।

কনজাংটিভাইটিসের লক্ষণ হলো— চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ ব্যথা, খচখচ করা বা অস্বস্তি। লক্ষণগুলো দেখা গেলেই যেহেতু এটি ছোঁয়াচে রোগ তাই বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। কোনো কারণে চোখ ভেজা থাকলে চোখ টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিতে হবে। এছাড়া চোখ উঠলে চশমার ব্যবহার করা প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করা যায়। তবে চোখ ঘষে চুলকানো যাবে না। অন্য কারও আই ড্রপ ব্যবহার করা উচিত হবে না, এতে কনজাংটিভাইটিস ছড়াতে পারে। একইসঙ্গে এলার্জিজনিত খাবার পরিহার করতে হবে৷ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবেন। তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের আরও বেশি সময় লাগতে পারে৷

এসআর/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!