স্বামী-সন্তানকে খুন করার ভয় দেখিয়ে এক গৃহবধূকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করছিল চট্টগ্রাম ওয়াসা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. তাজুল ইসলাম (৫২)। লোক-লজ্জার ভয়ে বছর ধরে এমন নিপীড়ন সহ্য করেছিলেন ওই নারী।
বাসা পরিবর্তন করেও তার এই অনাচার থেকে রেহায় পাচ্ছিলেন না ওই নারী। শেষে পরিবারিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন তিনি। মামলার পর বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) নগরের চান্দগাঁও এলাকা থেকে তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই মামলায় আদালত তাজুলকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিকেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
নগর পুলিশের প্রসিকিউশন শাখা সূত্রে জানা গেছে, আসামির জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
আসামি তাজুল নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর তৈয়বিয়া হাউজিং সোসাইটি গাউছিয়া ভিলার বাসিন্দা আব্দুল মজিদের সন্তান। তিনি চট্টগ্রাম ওয়াসা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে নগরের ডবলমুরিং থানায় দুর্নীতি দমনসহ দুটি মামলা রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারী একজন ইসলামী বক্তার স্ত্রী। স্বামী-সন্তান নিয়ে তাজুল ইসলামের গাউছিয়া ভিলায় ভাড়া বাসায় ছিলেন। একই ভবনের তৃতীয় তলায় থাকতেন তাজুল ইসলাম। স্বামী বেশিরভাগ সময় বাসার বাইরে থাকার সুযোগে তাজুল ভুক্তভোগী নারীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। কাজ না হওয়ায় স্বামী-সন্তানকে খুন করার হুমকিও দেন। গত বছরের ৫ জুন রাত ১২টার দিকে ভুক্তভোগী নারীর ঘরে ঢুকে দুই সন্তানের রুমের দরজা বন্ধ করে দেন। এ সময় তাকে কুপ্রস্তাব দিলে রাজি না হওয়ায় ধর্ষণ করেন তাজুল। এরপর থেকে তাজুল ধর্ষণকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। একই বছরের ১০ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় স্বামী-সন্তানকে খুনের হুমকি দিয়ে আবারও ধর্ষণ করেন তাজুল। পরে ভুক্তভোগী নারী তার স্বামীকে ঘটনা খুলে বলেন।
এরপর স্বামী ঘটনা সম্পর্কে তাজুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের বাসা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। একই মাসের ২৮ ডিসেম্বর তারা বাসা ছেড়ে অন্য ভাড়া বাসায় উঠেন। চলতি বছরের ২ জুলাই তাজুল আবারও নতুন বাসায় গিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। এ সময় ভুক্তোভোগী নারী লোকজন ডাকবে বললে তাজুল ভয়ে চলে যান। পরে ভুক্তভোগী নারী নিজে বাদি হয়ে বায়েজিদ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।