লোডশেডিংয়ের প্রভাব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, বেসরকারিতে কঠিন পরিস্থিতি

সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম শহরেও রুটিন করে চলছে লোডশেডিং। তীব্র তাপদাহের মধ্যে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এর ভীষণ প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

নগড়জুড়ে সকাল–সন্ধ্যার দীর্ঘ লোডশেডিংয়ের প্রভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের মনসংযোগে বিঘ্ন ঘটছে, ব্যাহত হচ্ছে পড়ালেখা। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে লোডশেডিংয়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি৷ কারণ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বড় একটি অংশ যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত!

চট্টগ্রাম শহরে যেসব বেসরকারি স্কুল-কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এর অনেকগুলোই শীতাতপ (এসি) নিয়ন্ত্রিত। বেশিরভাগ বেসরকারি শিক্ষার্থীদের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের মাধ্যমে পড়ানো হয়৷ কিন্তু বারবার লোডশেডিংয়ের প্রভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। সেইসঙ্গে তীব্র গরমে বদ্ধ ক্লাসরুমে (বিদ্যুতবিহীন এসিরুম) ক্লাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

এছাড়া সরকারি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ না থাকায় ক্লাসরুম অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে। এর সঙ্গে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে লেখাপড়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে শিক্ষার্থীরা।

নগরের বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, লোডশেডিংয়ের প্রভাবে তাদের দুর্ভোগের কথা৷ পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের শিক্ষার্থী রবিন দাশগুপ্ত বলেন, বারবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসে প্রজেক্টর বারবার চালু এবং বন্ধের ফলে পড়ার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। হারিয়ে ফেলছি মনোযোগ।

চট্টগ্রামের কলেজিয়েটের শিক্ষার্থী মুনতাসীর বলেন, কিছুক্ষণ পরপর বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ক্লাসে সমস্যা হয়। একদিকে তীব্র গরমে টিকে থাকার কষ্ট, অন্যদিকে বারবার লোডশেডিং হাঁপিয়ে তুলছে জীবন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আরেক শিক্ষার্থী আল-আমিন বলেন, লোডশেডিং যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলাকালীন হয় সেক্ষেত্রে পড়াশোনার পাশাপাশি ক্লাসের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে আমাদের মতো বেসরকারি বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় এসিরুমে পাঠদান হয়ে থাকে। বিদ্যুৎ না থাকলে এসব কক্ষে ক্লাস করার পরিবেশ থাকে না৷ এক্ষেত্রে সমস্যা বাড়ছেই।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফরিদুল আলম হোসাইনী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, স্কুলগুলোতে কী রকম লোডশেডিং হচ্ছে সেই বিষয়টা এখনও আমরা পরিষ্কার না কিংবা জানি না। তবে সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক। এটি একটি জাতীয় সমস্যা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলাকালীন কোনো লোডশেডিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকারের নেই। জরুরি কারণে বন্ধ হচ্ছে কি-না সেটাও আমার জানা নেই। যদি আমাদের পক্ষ থেকে কিছু করার থাকে, যেমন- অতীতেও দেখা গেছে লোডশেডিং হলে বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করলে, শিক্ষা প্তিষ্ঠান চলাকালীন বা পরীক্ষা চলাকালে বিদ্যুৎ অফিসগুলো আমাদের সাহায্য করে থাকে। যদি বিদ্যুৎ সংকট হয়ে থাকে তাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন এ ক্ষতির আওতায় না পড়ে সে ব্যাপারেও শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী আন্তরিক। আপনারা যদি সুনির্দিষ্ট তথ্য দেন তাহলে সেই তথ্য অনুযায়ী আমরা বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে কথা বলতে পারবো এবং তাদের সহযোগিতা নিতে পারবো৷

এ আইটি/এসআর

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!