চট্টগ্রামে বৃক্ষমেলার ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত, লাখ টাকার বনসাই বিবর্ণ

বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে টানা চারদিনের ভারী বর্ষণে নগরের সিআরবিতে আয়োজিত ১৫ দিনব্যাপী বৃক্ষমেলায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে অংশ নেওয়া বিভিন্ন নার্সারির ব্যবসায়ীরা।

টানা বৃষ্টিতে ভেসে গেছে লাখ লাখ টাকার দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের গাছ। এছাড়া স্টলের উপর ভেঙে পড়েছে গাছ।

ব্যবসায়ীরা জানান, বৃষ্টিতে নেই ক্রেতা। তাই বিক্রিও বন্ধ। বেশিরভাগ গাছে পচন ধরেছে। বেশি নষ্ট হয়েছে চারাগাছ। তুমুল বৃষ্টিতে মারা গেছে বিভিন্ন জাতের গাছ৷ এসব গাছের মূল্য ১০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত!

সরেজমিন দেখা গেছে, মেলা প্রাঙ্গণজুড়ে কাদাপানিতে সয়লাব। বৃষ্টির শঙ্কায় স্টল খুলেনি অনেক ব্যবসায়ী। কাদাপানিতে এখানে হাঁটাচলাও কঠিন।

হিলভিউ থেকে মেলায় অংশ নেওয়া জান্নাত শপ ডট সিটিজির প্রতিষ্ঠাতা মো. আত-তাওয়াবুল ইসলাম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমার দোকানের লাখের বেশি টাকার গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে ক্রেতা৷ আসছে না। বেচাবিক্রি বন্ধ।

তিনি বলেন, আমি ছাদবাগান করি। আমার প্রায় সব গাছই বিদেশি এবং এক্সপেন্সিভ। আমার কাছে ৪২ বছর বয়সী ‘ফাইকাস গ্রিন আইল্যান্ড’ নামে একটি বনসাই রয়েছে। এটির দাম ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এই গাছটি অনেকে এক লাখ টাকা দাম হাঁকিয়েছে। কিন্তু আমি দিইনি। বৃষ্টির পানিতে সেই গাছের চেহারা বদলে পাতা ঝরছে। লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম গাছ বিক্র‍য় এবং বিনিময় স্টলের সেকেন্ড এডমিন সায়হাম মাহমুদ বলেন, বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। আমাদের স্টলে এডেনিয়াম এনেছিলাম ২৫০টির মতো। যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা। প্রায় সবগুলো মারা গেছে। এছাড়া অর্কিড এনেছিলাম অন্তত ৮০ হাজার টাকার। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে।

সবুজ মেলা নার্সারির মালিক তৌহিদ বলেন, ১০ হাজার টাকা দিয়ে স্টল দিয়েছি। এখন পর্যন্ত লাভের মুখ দেখিনি। ৩৫ হাজার টাকার গাছ বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, মেলায় ক্রেতা নেই বললেই চলে। ক্রেতা যা দাম বলছে সেই দামে গাছগুলো দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। সারাদিন স্টলে থেকে নাস্তার টাকা পর্যন্ত উঠছে না। দোকানে তিনজন স্টাফ রয়েছে।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রাম শহরে ভয়াবহ জলজট, দায় এড়াতে ব্যস্ত চসিক—চউক

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম কায়সার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, নার্সারি ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হোক চাই না। বৃষ্টির কারণে মেলায় ক্রেতা– দর্শনার্থী নেই। তাদের সঙ্গে কথা বলবো। সবাই যদি  মেলার সময় আরও বাড়াতে বলে তাহলে বাড়ানো হবে।

গত ৩১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এ মেলার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ। মেলায় ৭৩টি নার্সারি ও চারা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

মেলার স্টলগুলোতে ফলদ, বনজ, ওষধিসহ নানা প্রজাতির গাছের চারা আছে। রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছের চারা। লাকি বাম্বু, বনসাই, ক্যাকটাস, এডেনিয়াম, অর্কিড, থাই কাঠগোলাপসহ বাহারি গাছের চারাে সমাহার রয়েছে মেলায়৷ তবে দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে বনসাই।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!