চট্টগ্রামে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে প্যানেল আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অ্যাডভোকেট শেখ অহিদুল নবী। অথচ তিনি ২০২১ সালের ২০ মে মারা গেছেন!
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সহাকারী সচিব (জিপি/পিপি) মো. আব্দুছ ছালাম মণ্ডল স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ নিয়োগ দেওয়া হয়।
মরহুম অ্যাডভোকেট শেখ অহিদুল নবী মিরসরাই এলাকার মৃত জালাল আহম্মদের ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, অ্যাডভোকেট শেখ অহিদুল নবী ২০০৯ সালে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর দ্বিতীয় মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ছিলেন।
মরহুম আইনজীবীর আপন ছোট ভাই মোহাম্মদুন্নবী শিমুল অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, গত ২০২১ সালের ২০ মে আমার বড় ভাই অ্যাডভোকেট শেখ অহিদুল নবী মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার আগে থেকে পিপি নিয়োগের জন্য যে তালিকা দেওয়া হয়েছে হয়ত তা দেখেই আইন ও বিচার বিভাগ তাকে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়া উদ্দিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আইন ও বিচার বিভাগে দেওয়া আগের তালিকা অনুযায়ী এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তখন শেখ অহিদুল নবী পাবলিক প্রসিকিউটর ছিলেন। হয়ত এজন্য তাকে আবারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার মৃত্যুর বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের জানা নেই।
তিনি বলেন, মৃত্যুর বিষয়টি না জানার কারণে অ্যাডভোকেট শেখ অহিদুল নবীকে পিপি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তালিকায় তার নাম দেখার পরই মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।
একই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সাবেক চট্টগ্রাম জেলা পিপি আবুল হাসেম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আইনজীবী সমিতির যথাযথ তদন্ত করে তালিকা দেওয়া উচিত ছিল। তাছাড়া মন্ত্রণালয়ও জানত না তিনি মারা গেছেন। এটি একটি অনভিপ্রেত ঘটনা।
এর আগে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর আদালতে নতুন ১৭ জনকে পাবলিক প্রসিকিউটর ও বিভিন্ন স্তরে ১৭৭ জন আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ। যাতে চট্টগ্রামের সাতটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের তিনটিতে নতুন পিপি ও অপর চারটিতে আগের পিপিদের পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া বিশেষ আদালত ও ট্রাইব্যুনালগুলোতে বিশেষ পিপি হিসেবে ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি হিসেবে ২৭ জন ও মহানগর দায়রা জজ আদালতে ২৬ জন এবং সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) হিসেবে জেলা আদালতে ৩৮ জন ও মহানগরে ৩০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অধস্তন আদালতগুলোতে নিয়োগ পেয়েছেন ২৩ অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (অতিরিক্ত জিপি) ও ১৬ সহকারী জিপি।
আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম