চট্টগ্রামে ‘ভয়ঙ্কর’ হচ্ছে ডেঙ্গু, কেড়ে নিল কলেজছাত্রের তাজা প্রাণ

চট্টগ্রামে দিন দিন ‘ভয়ঙ্কর’ রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু। ভয়ঙ্কর সেই ডেঙ্গু এবার কেড়ে নিয়েছে তরতাজা এক প্রাণ।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ভোরে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে প্রাণ হারান ২৩ বছরের ওই তরুণ। তার নাম জাকারিয়া হোসেন তুষার। তিনি চট্টগ্রাম কলেজের ডিগ্রির শিক্ষার্থী ছিলেন।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে থাকার পর মারা যান জাকারিয়া হোসেন তুষার। এ নিয়ে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু রোগে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৪ জনে।

জানা যায়, দুই ভাই-বোনের মধ্যে ছোট ছিলেন তুষার। তিনি পরিবারের সঙ্গে নগরের পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকায় থাকতেন।

এর আগে তুষার মালয়েশিয়ায় লেখাপড়া করতেন। দেশে এসে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন এবং ডিগ্রি শেষ বর্ষে পড়ছিলেন। হঠাৎ ডেঙ্গুতে অকাল মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েছে তার পরিবার ও বন্ধুরা৷

পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকার মালুম মসজিদে জানাজা পড়তে আসা তার শৈশবের বন্ধু ফজলুল রাব্বি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমার ছোটবেলার বন্ধু সে। এমন মৃত্যুতে আমি শোকাহত। ভাবতে পারিনি এত তাড়াতাড়ি সে সবাইকে ছেড়ে চলে যাবে।

শাহরিয়ার হোসেন জয় নামে আরেক বন্ধু আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, তুষার অসুস্থ হওয়ার শুরু থেকেই আমি তার সঙ্গে ছিলাম। গত ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় তার ডেঙ্গু টেস্ট পজিটিভ আসে। পরে তার বোনসহ আমরা তাকে মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেদিন মোটামুটি ভালো ছিল। রাতে ভাতও খেয়েছিল। কিন্তু পরে তার অবস্থা ক্রমাগত খারপা হচ্ছিল, একপর্যায়ে ক্যানোলা খুলে ফেলছিল। ২৬ অক্টোবর তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসক অবস্থা দেখে বাঁচার সম্ভাবনা ১% বলে জানায়। ২৭ অক্টোবর লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় এবং সারাদিন ছিল। আজ ভোরে আমাদের ছেড়ে চলে গেল বন্ধু৷

যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাহাদী হাসান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, তিনি আমাদের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন, গত ২৫ অক্টোবর এসেছিলেন৷ অবস্থা ক্রমাগত খারাপের দিকে যাচ্ছিল এবং তার রক্তের গ্রুপ ছিল এবি নেগেটিভ। সেইসাথে ডেঙ্গুর যত কমপ্লেক্স বিষয় আছে সবই ছিল তার ভেতর। কিডনি, প্রেশার, ফুসফুস থেকে শুরু করে সবই কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলছিল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমরা ব্লাড দিচ্ছিলাম, কিন্তু কাজ হচ্ছিল না। ২৬ অক্টোবর আইসিইউতে নেওয়া হয় এবং ২৭ অক্টোবর লাইফ সাপোর্টে দেওয়া হয়৷ আমি গতকাল রাতেও দেখে এসেছিলাম। আজ ভোরে পেশেন্টের মৃত্যু হয়।

এআইটি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!