আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগী ভর্তি নিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অথচ করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য ২০ বেডের আইসোলেশন সেন্টার রয়েছে এই হাসপাতালে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, অন্য রোগীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে করোনা রোগী ভর্তি করানো হচ্ছে না। এদিকে সরকারি বরাদ্দের ৬ লাখ টাকাও ফেরত গেছে ।
জানা গেছে, আইসোলেশনে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ৯টি সিলিন্ডার ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে করোনা আক্রান্তরা চিকিৎসা নিতে প্রতিদিন শহরের হাসপাতালে ছুটছেন। তবে রোগী ভর্তি না নিলেও নমুনা সংগ্রহ চালু রয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সাংসদ ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ব্যক্তিগত অনুদানে করোনা রোগীদের জন্য ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪টি ৭০ লিটারের সেন্ট্রাল অক্সিজেনসহ আধুনিক মানের ২০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করে দেন।
এছাড়া সীতাকুণ্ড আসনের এমপি দিদারুল ইসলাম ৪টি ৭০ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডার, ইউসিবি ব্যাংকের ইসি চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি ৬টি ১৩ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডার, আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের ৪টি ৭০ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডার, কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি (কাফকো) করোনা প্রতিরোধক বুথ স্থাপন, অক্সিজেন সিলিন্ডার, ফেইস শিল্ড, সোয়ার স্টিক, বেড টিউব, নমুনা সংগ্রহ বুথসহ কোটি টাকার উপরে চিকিৎসাসামগ্রী প্রদান করে।
এসব উপহার সামগ্রী অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হয়ে হাসপাতালের স্টোর রুমে পড়ে আছে দীর্ঘদিন। বর্তমানে ৩টি ৭০ লিটারের ও ৩০টি ১৩ লিটারের অক্সিজেন সিলিল্ডার সচল থাকলেও ৯টি ৭০ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডার নষ্ট।
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য নুরুল অবছার তালুকদার জানান, সমস্যা সমাধানে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা আহ্বানের অনুরোধ করলেও বিগত এক বছর ধরে কোনো সভা করা হয়নি।
তিনি আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার তাঁর করোনা আক্রান্ত পিতাকে হাসপাতালের আইসোলেশনে নিয়ে গেলে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। পরে চট্টগ্রাম নগরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।
হাসপাতালের দায়িত্বরতরা জানান, ২০ শয্যার করোনা আইসোলেশনের সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ২০টি পয়েন্ট থাকলেও একটিরও অক্সিজেন সংযোগ নেই। আইসোলেশন বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন ডায়রিয়া ও অন্যান্য রোগীরা।
আইসোলেশনে থাকা রোগীরা জানান, হাসপাতালের জেনারেটর নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এক্স-রে মেশিনও নষ্ট। ২টি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও রোগীরা ব্যবহার করতে পারে না।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মেজবাহ ছালেহীন জানান, ২০ শয্যার আইসোলেশন চালু হলেও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো নিম্নমানের হওয়ায় অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, হাসপাতালে ডায়েরিয়া, জ্বরসহ অন্যান্য রোগী বেশি হওয়ার কারণে করোনা রোগী ভর্তি করা হলে তারাও সংক্রমিত হতে পারেন। তাই হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই লকডাউনে ভাড়ায় যাত্রী পরিবহনের সময় কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জ্যেরটেক এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক আটক হন। পরে তাকে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরবি