ডিবির হাতে অপহরণের ‘নাটক’ সাজিয়ে মালিকের টাকা আত্মসাতের চেষ্টা

মালিকের ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অপহরণ ‘নাটক’ সাজিয়েছিলেন সুদীপ্ত সাহা ওরফে টিংকু (৩৫)। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তার। পুলিশের জালে ধরা পড়েন তিনি।

টিংকু রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহাজন বাড়ির অসীম সাহার ছেলে। তার বিরুদ্ধে দোকান মালিক প্রদীপ বণিক বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। আগ্রাবাদ আখতারুজ্জামান সেন্টারের দি সন্দ্বীপ জুয়েলার্সের কর্মচারী ছিলেন তিনি।

গত শুক্রবার প্রদীপ বণিক ৪টি এটিএম কার্ড দিয়ে ১২ লাখ টাকা বুথ থেকে তুলতে পাঠান টিংকুকে। কিন্তু টাকা নিয়ে সে ফিরে না আসায় খোঁজ নিতে থাকেন প্রদীপ।

বিকাল ৪টায় মালিককে ফোন দেন টিংকু। এ সময় তিনি জানান, ‘বুথ থেকে ১২ লাখ টাকা তুলে বাসায় ফিরছিলেন। এমন সময় কালো রংয়ের একটি মাইক্রোবাস ডিবি পরিচয়ে তাকে তুলে নেয়। পরে হাত-পা, চোখ বন্ধ করে ১২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকিও দেওয়া হয়। এরপর তাকে বান্দরবান পাহাড়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সন্দেহের তীর টিংকুর দিকেই যায় পুলিশের। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ভুয়া অপহরণ নাটক সাজিয়ে ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন। পরে স্বীকারোক্তি অনুসারে রাতে তার বোনের বাসা থেকে ১১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

শনিবার (১০ জুলাই) দুপুর ১২টায় ডবলমুরিং থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান (সিএমপি) পশ্চিম জোনের উপপুলিশ কমিশনার মো.আব্দুল ওয়ারিশ।

তিনি আরো বলেন, টিংকু খুবই চালাক প্রকৃতির লোক। ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানালেও লোকেশন বান্দরবান দেখানোর জন্য সে নিজেই বান্দরবান চলে যান। সিসিটিভি ফুটেজে বুথের সামনে থেকে মাইক্রোবাস অতিক্রম করে গেলেও তাকে গাড়িতে তুলে নিতে দেখা যায়নি। পরে তার ওপর সন্দেহ হলে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে নিজেই নাটক সাজিয়ে টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন।

এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, টিংকু আগ্রাবাদ দি সন্দ্বীপ জুয়েলার্সে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। মালিক তাকে খুবই বিশ্বাস করতেন। এমনকি মালিকের এটিএম কার্ডের পিন নাম্বারও তার জানা ছিল। গত বৃহস্পতিবার ৪টি এটিএম কার্ড টিংকুকে দিয়ে দেন। শুক্রবার ১২ লাখ তুলে সকাল ১১টায় বাসায় আসতে বলেন। কিন্তু দুপুর ২টায়ও না আসলে তার খোঁজ করেন প্রদীপ। এরপর বিকাল ৪টায় ফোন করে টিংকু জানান, সকাল সাড়ে ১১ টাকার দিকে আগ্রাবাদ সিঅ্যান্ডএফ ভবনে অবস্থিত একটি এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে আসার সময় কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে থাকা ৪-৫ জন লোক ডিবি পরিচয়ে তাকে নিয়ে যায়। পরে তার সঙ্গে থাকা ১২ লাখ টাকা তারা ছিনিয়ে নেয়। ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো ভয় দেখিয়ে তার হাত-পা, চোখ বেঁধে বান্দরবানে পাহাড়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। আসলে মালিকের টাকা আত্মসাতের জন্য সব ছিল তার সাজানো নাটক।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত উপ কমিশনার পংকজ দত্ত, সহকারী কমিশনার মো. মাহামুদুল হাসান মামুন, অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসীন, পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ রানা, উপ পরিদর্শক নিপু বিশ্বাস, মো. শরীফ উদ্দিন, অর্ণব বড়ুয়া, সহকারী উপ পরিদর্শক কাজী সাইফুল, সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।

এএইচ/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!