পিবিআই রিপোর্ট: হোয়াটসঅ্যাপে নগদ নিয়ে গুজবের জাল বিকাশের

দেশের জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদে’র বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশে’র অপপ্রচারের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

গত ২৩ জুন পিবিআইয়ের অর্গানাইজ ক্রাইম ইউনিটের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের দ্রুত প্রসার এবং ব্যবসায়িক সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে মিথ্যা অপপ্রচার চালায় বিকাশ।

পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিকাশের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সংঘবদ্ধভাবে নগদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এসব অপপ্রচার ও গুজব ছড়িয়ে নগদের সুনাম নষ্ট এবং নগদ লিমিটেডকে জনসম্মুখে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।

পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, খুব কম সময়ের মধ্যে দ্রুত প্রসার লাভ করে নগদ। হাজারে ১১ টাকা চার্জ নেওয়ার কারণে জনগণের মধ্যে সুনামের সঙ্গে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান বিকাশ হাজারে ২০ টাকা চার্জ নিয়ে আসছিল।

চার্জ কম নেওয়ার কারণে নগদ সহজেই প্রসার লাভ করতে শুরু করে। আর তাতেই বিকাশ ঈর্ষান্বিত হয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়।

অপপ্রচারের নেপথ্যের মানুষ খুঁজতে গিয়ে পিবিআইয়ের অনুসন্ধানে উঠে আসে বিকাশের বিজনেস ক্লাস্টার হেড নাজমুল করিম ও রিজিওনাল ম্যানেজার আব্দুহ সুফীর নাম। পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, নাজমুল করিম ও আব্দুহ সুফীর নম্বর থেকে ‘সেন্ট্রাল নর্থ ক্লাস্টার’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে অপপ্রচারে নেতৃত্ব দেওয়া হয়। পরে ওই গ্রুপ আবার মুছেও ফেলেন তারা।

অভিযুক্ত নাজমুল করিম ও আব্দুহ সুফীকে তদন্তের স্বার্থে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নি) মো. মেজবা উদ্দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চাকরির স্বার্থে ও বিকাশ কোম্পানিকে আর্থিকভাবে লাভবান করার জন্য তারা সবাই একই উদ্দেশ্যে নগদ লিমিটেডকে হেয়প্রতিপন্ন ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্যে এহেন কাজটি করেছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।’

গত ৯ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নগদ নিয়ে একটি নেতিবাচক খবর প্রকাশ হয়। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন বলা হয়েছে, সেই খবরের কৌশলগত দিক অবলম্বন করে পরস্পর যোজসাজশে পরিকল্পিতভাবে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে নগদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও মানহানিকর গুজব ছড়িয়ে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম নষ্ট এবং আর্থিকভাবে ক্ষতি সাধন করা হয়েছে।

এরআগে এ সংক্রান্ত অভিযোগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার সিএমএম আদালতে অজ্ঞাত ১০ হাজার জনকে আসামি করে একটি মামলা করে নগদ। মামলায় প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সরকার, সেনাবাহিনী ও সরকারি সেবার বিরুদ্ধে একটি চক্র গুজব ছড়িয়ে লিফলেট বিলি করছিল বলে অভিযোগ করা হয়। সে সময় সারাদেশে অন্তত তিন লাখ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে বলেও নগদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।

পরে পিবিআইকে এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। গত ২৩ জুন পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. মেছবা উদ্দিন স্বাক্ষরিত ওই তদন্ত প্রতিবেদনটি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট আদালতে জমা দেওয়া হয়।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!